সিরিয়ার রেড ক্রিসেন্ট অবশেষে হোমসে আটকে পড়া আহত বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। তারা ইতোমধ্যেই নারী ও শিশুসহ ২৭ জনকে হোমসের অবরুদ্ধ শহরতলী বাব আমর থেকে সরিয়ে নিয়েছে। সরকার বিরোধী আন্দোলনকারীদের শক্ত ঘাঁটি হোমসের এই অংশটি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার অনুগত বাহিনীর গোলা বর্ষণের মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
সিরিয়ান আরব রেড ক্রিসেন্ট গত শুক্রবার বিকেলের দিকে বাব আমর শহরতলীতে প্রবেশ করতে শুরু করে। সরকার বিরোধীদের এই শক্ত অবস্থানে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক সপ্তাহ ধরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সিরীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছার পর সিরীয় রেড ক্রিসেন্ট বাব আমরে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। রেড ক্রসের মুখপাত্র হিচাম হাসান শুক্রবার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই সাত আহত ও ২০ নারী-শিশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে কেউ সেখান থেকে সরে যেতে আগ্রহী নয় কারণ তারা সরকারি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন হওয়ার আশঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম।
বাব আমরের পরিস্থিতিকে শোচনীয় বলে উল্লেখ করে হিচাম হাসান বলেন, ‘আমরা মাত্র আমাদের কাজ শুরু করেছি। আমরা সব আহতকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এর জন্য যত সময়ই লাগুক না কেন।’
এদিকে হোমসে গোলার আঘাতে নিহত দুই বিদেশি সাংবাদিকসহ ঘটনায় আহত অপর দুই বিদেশি সাংবাদিককে এখনও সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
সিরীয় কর্তৃপক্ষ এ জন্য বিদ্রোহীদের দায়ী করে বলেছে, তারা সাংবাদিকদের সরাতে বাধা দিচ্ছে। অপর দিকে বিরোধীরা দাবি করছে, সাংবাদিকরা ওই এলাকা ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ফরাসি সাংবাদিক এডিথ বোভেয়ার এবং ব্রিটিশ আলোকচিত্রী পল করনয় বিস্ফোরণের ফলে পায়ে মারাত্মকভাবে আঘাত পান । একই বিস্ফোরণে মার্কিন প্রতিবেদক মেরি ক্যালভিন ও ফরাসি আলোকচিত্রী রেমি অচলিক নিহত হন।
আহত সাংবাদিক বোভেয়ারের পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। তার জীবন হুমকির সম্মুখীন বলে জানায় সংবাদমাধ্যম । গোলা বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও সৌভাগ্যক্রমে আহত না হওয়া অপর দুই বিদেশি সাংবাদিকও বর্তমানে হোমসে অবস্থান করছেন।
এদিকে সিরিয়ার সরকার বিরোধীদের সংগঠন লোকাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি বা এলসিসি দাবি করেছে, শুক্রবার সিরীয় বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে। শুক্রবার সিরিয়ার হোমস, কামিশিলি, আলেপ্পো, ইদলিব, দেরা এবং দামেস্কের শহরতলীগুলোতে বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানায় তারা। তারা বিক্ষোভের কিছু ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে।
এলসিসি জানায় বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে মধ্যাঞ্চলীয় শহর হামায়।