আর্জেন্টিনাকে কটাক্ষ করে নাচ, জার্মানিতেই তুমুল সমালোচনা

আর্জেন্টিনাকে কটাক্ষ করে নাচ, জার্মানিতেই তুমুল সমালোচনা

ফুটবলে শুধু যে বোকাই আছে তা নয়, বোকার হদ্দও আছে’ – এ কথা জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী কয়েকজন ফুটবলারকে উদ্দেশ্য করে লিখেছে জার্মানিরই এক পত্রিকা৷

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আর্জেন্টাইনদের কটাক্ষ করে নেচে জার্মানিতেই এখন তুমুল সমালোচিত মারিও গ্যোৎসেরা৷ গ্যোৎসের গোলেই ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারায় জার্মানি৷ তারপর থেকে আরেকটি উপমাও যোগ হয়েছে নামের আগে, গ্যোৎসে এখন ‘ওয়ান্ডার বয়’ গ্যোৎসে৷ তবে মঙ্গলবার বার্লিনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ‘ওয়ান্ডার বয়’ এবং তার আরো পাঁচ সতীর্থ যে কাণ্ড করেছেন তাকে জার্মান সংবাদ মাধ্যম মোটেই ভালোভাবে নেয়নি৷ তাদের নাচকে ‘কুরুচিপূর্ণ’ বলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ফুটবলার হিসেবে তাদের বুদ্ধি নিয়ে উল্টো কটাক্ষই করেছে পত্রিকাগুলো৷image_90866_0

বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের পেছনে বিশাল মঞ্চে ৫ লাখ সমর্থকের সামনে নেচে-গেয়ে বিশ্বকাপ জয় উদযাপন করার এক পর্যায়ে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় কুঁজো হয়ে নেচে বেড়াতে দেখা যায় গ্যোৎসেসহ ছয় জার্মান ফুটবলারকে৷ কী নাচ ছিল সেটা? খেলোয়াড়রা তা-ও বলে দিয়েছেন৷ নাচতে নাচতে তারা তখন গাইছিলেন, ‘‘এইভাবে গাউচোরা (আর্জেন্টাইনরা) হাঁটে, গাউচোরা হাঁটে ঠিক এইভাবে৷” তারপরই লাফিয়ে নাচের ভঙ্গি বদলে ফেলেন তারা৷ সোজা হয়ে নাচতে নাচতে তারা তখন গাইতে থাকেন, ‘‘আর এভাবে জার্মানরা হাঁটে, জার্মানরা হাঁটে ঠিক এইভাবে৷” উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের কাছে পুরো পরিবেশনাটি নিছক বিনোদনই মনে হয়েছিল৷ তাই নাচ দেখে তারা প্রাণ খুলে হেসেছেন আর হাত তালি দিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরা ফুটবলারদের৷

কিন্তু সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়াটা হয়েছে উল্টো৷ ফ্রাঙ্কফুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং গ্যোয়েৎসেদের সমালোচনা করে লিখেছে, ‘‘ব্রান্ডেনবুর্গ গেটের কাছে বিজয় উদযাপনের অনুষ্ঠানটা জার্মানদের জন্য যেন এক আত্মঘাতী গোল৷ ফাইনালের প্রতিপক্ষকে ভাঁড়ের মতো কটাক্ষ করে ফুটবলাররা একটি মুক্তমনা, সহনশীল জাতিকেই খাটো করেছে৷”

টাগেসস্পিগেল গ্যোৎসেদের নাচকে ‘রুচিহীন’ আখ্যা দিয়ে লিখেছে, এর মাধ্যমে ফুটবলাররা ব্রাজিলের মাঠে যে সুন্দর আচরণ দেখিয়ে সুনাম কুড়িয়েছিল তার অনেকটাই মাটি করে দিল৷ পত্রিকাটি জনসমক্ষে একটি জাতিকে কটাক্ষ করার মতো ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের সমালোচনা শেষ করেছে এভাবে, ‘‘জার্মানদের শালীনতাবোধের নিজস্ব অহংকারটাও গেল৷ তাদের কাছে নিজেদের আনন্দটাই যথেষ্ট ছিলনা, বোঝা গেল, দুঃখে নুয়ে পড়া প্রতিপক্ষের ওপর আরেকটু অত্যাচার চালানোর পরই শুধু তাদের আনন্দ পূর্ণতা পায়৷ জার্মানির বাইরের অনেক মানুষের মাথায় বিশ্বকাপের স্মৃতি হিসেবে এখন হয়তো এ ব্যাপারটাই থাকবে৷ এটাও হয়তো ঠিক যে এভাবে নেচে তারা হয়তো বিশেষ কিছু বোঝাতে চাননি৷ কিন্তু তারা দেখিয়ে দিয়েছেন, ফুটবলে শুধু যে বোকাই আছে তা নয়, বোকার হদ্দও আছে৷ ”-এএফপি

আন্তর্জাতিক খেলাধূলা