ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত নিকাব পরার ব্যাপারে ফ্রান্সের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখে মঙ্গলবার এক রায় দিয়েছে।
ফ্রান্সে এই নিষেধাজ্ঞা ধর্মাচরণ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী বলে ২৪ বছরের এক ফরাসি তরুণী ইউরোপীয় আদালতে মামলা করেছিলেন।
ফ্রান্স চার বছর আগে প্রকাশ্য স্থানে নিকাব পরা নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করে।
পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সে মুসলমানদের সংখ্যা সবেচেয়ে বেশি। সেদেশের মোট জনসংখ্যার আট শতাংশের মতো মুসলিম, যাদের অধিকাংশই উত্তর আফ্রিকার সাবেক ফরাসি উপনিবেশ থেকে আসা।
ফলে চার বছর আগে ফ্রান্সের সাবেক কনজারভেটিভ সরকার যখন বাড়ির বাইরে প্রকাশ্য স্থানে নিকাব অর্থাৎ পুরোপুরি মুখ ঢাকা পোশাক আইন করে নিষিদ্ধ করে, তখন মুসলিম সমাজে বেশ হইচই শুরু হয়। ফ্রান্সের মুসলিম সমাজ বিতর্কিত ওই আইনের পক্ষে বিপক্ষে ভাগ হয়ে যায়।
আদালত বলেছে, ফরাসি এই আইনে ধর্মকে টার্গেট করা হয়নি, বরঞ্চ পোশাক দিয়ে মুখ ঢাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে।
ফ্রান্সের ওই আইনে নিকাব পরে বাইরে বেরুলে ১৫০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এবং আইন ভঙ্গের জন্য অনেক মহিলাকে জরিমানাও করা হয়েছে।
এরপর গত বছর একজন ফরাসি এক মুসলিম মহিলা এই আইনের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের শরণাপন্ন হন।
তিনি সেখানে যুক্তি দেন এই আইন তার ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করেছে। তাকে কেউ জোর করে নিকাব পরান নি। এটা একবারেই তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কিন্তু ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত তার এই যুক্তি গ্রহণ করেনি।
আদালত তার রুলিংয়ে বলেছে, ফরাসি এই আইনে ধর্মকে টার্গেট করা হয়নি, বরঞ্চ পোশাক দিয়ে মুখ ঢাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে।
এই মামলায় ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেয়া হয়, মানুষের মুখ, মুখের ভঙ্গী সামাজিক সম্পর্কে এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে।
ইউরোপীয় আদালত সরকারের এই যুক্তির সাথে একমত হয়েছে।
ফ্রান্সে এই নিকাব নিষিদ্ধ করে আইন পাসের পর, প্রতিবেশী দেশ বেলজিয়ামও এই একই ধরনের আইন পাশ করেছে।– বিবিসি।