ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ২৫ জুন তিন দিনের সফরে ঢাকা আসছেন৷ ভারতের পররাষ্ট্র দফতর শনিবার এই তথ্য জানানোর পর তার সফর নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে৷
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষমা পারেন ভারতের নতুন সরকার নিয়ে বাংলাদেশে যে ভয় আছে তা কাটিয়ে দিতে৷ আর ভারতের পররাষ্ট্র দফতর বলেছে এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে৷
সুষমা স্বরাজ তিনদিনের সফরে ২৫ জুন ঢাকায় আসবেন৷ আর ঢাকা ছেড়ে যাবেন ২৭ জুন৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর আমন্ত্রণে শুভেচ্ছা সফরে তিনি বাংলাদেশে আসছেন৷
ভারতে বিজেপি সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর সুষমা স্বরাজই প্রথম মন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন৷ বাংলাদেশের যদিও প্রত্যাশা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম বিদেশ সফর হবে বাংলাদেশে৷ তবে তিনি ভুটানকেই বেছে নিয়েছেন৷
বাংলাদেশ সফরের সময় সুষমা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন৷ তবে তিনি বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কোন বৈঠক করবেন কিনা তা এখনো জানা যায়নি৷ সফরকালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন৷ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই সফর ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে আরে সুদৃঢ় করবে৷”
সুষমা স্বরাজের সঙ্গে নীতি নির্ধারক ও ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদের প্রতিনিধিরাও ঢাকায় আসবেন৷
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ-এর বাংলাদেশ সফরকে দুই দেশের জন্যই একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘‘ভারতের মোদি সরকার নিয়ে বাংলাদেশে এক ধরনের ভয় কাজ করছে৷ সুষমা তার এই সফরে সেই ভয় কাটিয়ে দিতে পারেন৷”
জানা গেছে, সুষমার বাংলাদেশ সফরে স্থল সীমান্ত চুক্তি প্রাধান্য পাবে৷ ভারত এ ব্যাপারে মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছে৷ তারা চাইছে এই চুক্তিটি করে ফেলতে৷ আর বাংলাদেশ থেকে পণ্যবাহী যানবাহন ভারতে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হতে পারে৷ বিনিময়ে বাংলাদেশ যদি ভারতীয় পণ্যবাহী যানবাহন বাংলাদেশেও ঢুকতে নাও দেয় তাতেও আপত্তি থাকবেনা৷ কারণ ভারত মনে করে এতে তাদের বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহণের খরচ কমে যাবে৷ এই বিষয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে একাধিক খবরও প্রকাশ পেয়েছে৷
বাংলাদেশের তরফে তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প এবং বন্দি বিনিময়কে প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানা গেছে৷
ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় বাংলাদেশকে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে৷ এটা কোনো বিনিময় বা মান-অভিমানের বিষয় নয়৷ প্রত্যেকটি বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত এবং যুক্তি দিয়ে আলোচনা করলেই সুফল পাওয়া যেতে পারে৷ সূত্র: ডিডব্লিউ