ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নকআউট পর্বে উঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো উরুগুয়ে

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নকআউট পর্বে উঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো উরুগুয়ে

urguyaব্রাজিল বিশ্বকাপে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নকআউট পর্বে উঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো উরুগুয়ে। বৃহস্পতিবার রাতের দ্বিতীয় ম্যাচে উরুগুয়ে ২-১ গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। এ ছাড়া ভোর ৪টায় অষ্টম দিনের শেষ খেলায় জাপান ও গ্রীসের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।

মাত্র চার সপ্তাহ আগে বাম হাটুতে অস্ত্রোপচারের পর লুই সুয়ারেজের ফিটনেস নিয়ে জল্পনা-কল্পনা কম হয়নি। পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় কোস্টারিকার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচও দেখেছেন বেঞ্চে বসে।

সেই ম্যাচে হারের পর উরুগুয়ের কোচ অস্কার তাবারেসও আর ঝুঁকি না নিয়ে থাকতে পারলেন না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জীবন-মরণ ম্যাচে সুয়ারেজকে নামিয়ে দিয়ে যে জুয়াটা খেললেন, তাতেই বাজিমাত করলো উরুগুয়ে।

সুয়ারেজের জোড়া গোলেই ‘গ্রুপ অব ডেথ’ থেকে ইংল্যান্ডকে প্রায় মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়ে কক্ষপথে ফিরলো দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

সাও পাওলোর এরিনা করিন্থিয়ান্সে দুই দলের আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে যখন প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার অপেক্ষা, তখনই দৃশ্যপটে আবির্ভাব এ মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ৩১ গোল করা লিভারপুল স্ট্রাইকারের।

৩৯ মিনিটে বাম উইং থেকে ভেতরে ঢুকে পড়া এদিনসন কাভানি যে ক্রস ভাসান, তাতে ইংলিশ ডিফেন্ডার ফিল জ্যাগিয়েলকাকে এড়িয়ে বল খুঁজে পায় সুয়ারেজের মাথা। হেডে লক্ষ্যভেদ করে তখনই উরুগুয়েকে এগিয়ে নিতে ভুল করেননি একটুও।

এর আগেই বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলের জন্য ওয়েইন রুনির দীর্ঘ অপেক্ষা অল্পের জন্য ঘোঁচেনি। ৩১ মিনিটে স্টিভেন জেরার্ডের ফ্রি-কিক থেকে তিনিও ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিতে পারতেন হেডেই। কিন্তু গোলপোস্টের মাত্র এক গজ দূর থেকে লাফিয়ে উঠে করা হেডে বল ফিরে আসে বারে লেগে। দলকে সমতায় ফেরানোর সহজতম সুযোগটিও কাজে লাগাতে পারেননি রুনি।

৫৩ মিনিটে লেইটন বেইনসের ক্রসে বঙের ভেতর এমন জায়গায় বল পেয়ে যান, যেখান থেকে উরুগুয়ের গোলরক্ষক ফের্নান্দো মুসলেরাকে পরাস্ত করতে পারলেই হতো। কিন্তু পারেননি।

তবে শেষ পর্যন্ত রুনির প্রথম বিশ্বকাপ গোলেই সমতায় ফেরে ‘থ্রি লায়ন্স’। ৭৫ মিনিটে ডান উইং দিয়ে ঢোকা ড্যানিয়েল স্টুরিজ পাস বাড়ান জনসনকে। তার পা ঘুরে অনেকটা অরক্ষিত রুনির কাছে বল যেতেই টোকা দিয়ে পাঠান জালে।

ইংল্যান্ড সমতায় ফেরার আগে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারিয়েছেন সুয়ারেজও। তবে রুনিদের ম্যাচে ফেরার আনন্দও খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি তিনি।

৮৫ মিনিটে নিজেদের গোলরক্ষকের লং বলই খুলে দেয় গোলের পথ। সুয়ারেজের লিভারপুল সতীর্থ জেরার্ড মাঝমাঠে হেডে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। সে বল ধরেই এগিয়ে যাওয়া সুয়ারেস ডান পায়ের জোরালো প্লেসিং শটে নিশ্চিত করেন উরুগুয়ের জয়। এই হারে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায়ের আশঙ্কা চোখ রাঙাচ্ছে ইংল্যান্ডকে।

যদিও ডি গ্রুপ থেকে তাদের নকআউট পর্বে যাওয়ার গাণিতিক সম্ভাবনা এখনো আছে। সেক্ষেত্রে কোস্টারিকার বিপক্ষে শেষ গ্রুপ ম্যাচ জিতলেই শুধু হবে না, পরের দুই ম্যাচে ইতালির জয়ের প্রার্থনায়ও থাকতে হবে। এরপরও গোলের হিসাব-নিকাশ তো আছেই।

এদিকে অষ্টম দিনের শেষ খেলায় জাপান ও গ্রীসের ম্যাচটি গোল শূন্য ড্র হয়েছে। প্রথমার্ধেই ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া গ্রিসকে হারাতে ব্যর্থ হয় এশিয়ার অন্যতম আশা জাগানো দলটি।

ভোর ৪টায় নাতালে মুখোমুখি হয় জাপান ও গ্রিস। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দুই দলই একাধিক গোলের সুযোগ পেলেও গোল অধরাই থেকে গেল এই ম্যাচে।

প্রথমার্ধের ৩৮ মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় গ্রিস। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন দলটির মিডফিল্ডার কাটসোরানিস।

দ্বিতীয়ার্ধে গ্রিসের ওপর আশানুরূপ প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয় জাপান। গোল শূন্যভাবেই শেষ হয় ম্যাচটি।

খেলাধূলা