যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিমান হামলার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে ইরাক। গত এক সপ্তাহে সুন্নী চরমপন্থী সংগঠন আইএসআইএলের জঙ্গিরা সে দেশের প্রধান প্রধান শহর দখল করে নেয়ার পর বুধবার বাগদাদ সরকার এ অনুরোধ জানায় বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বুধবার মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল মার্টিন ডিম্পসে মার্কিন সিনেটরদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিমান হামলা চালানোর ব্যাপারে আমরা ইরাক সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পেয়েছি৷’
ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোশায়ার জেবারিও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘দুই দেশের নিরাপত্তা চুক্তির আওতায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা চালাতে ওয়াশিংটনের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে৷’ তিনি আরো বলেন, ‘সংকট সমাধানে সামরিক অভিযানই যথেষ্ট নয়৷ আমরা জোরালো রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষেও কথা বলছি৷’
বুধবার সুন্নি বিদ্রোহীরা বাগদের উত্তরে অবস্থিত বাজিতে ইরাকের সর্বোবৃহৎ তেল শোধনাগারে হামলা চালানোর পর ইরাক এ অনুরোধ জানাল। যদিও ইরাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কাসিম আতা টেলিভিশনে প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাজির শোধনাগার থেকে জঙ্গিদের হটিয়ে দেয়ার দাবি করেছেন। সেনা অভিযানে ৪০ সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, বাজির ৭৫ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহীরা।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বুধবার ইরাক সঙ্কট নিয়ে কংগ্রেসের উর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সম্পর্কে হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র জানান, বৈঠকে ওবামা সুন্নী বিদ্রোহীদের মোকাবেলায় ইরাকী সেনাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রকে কী পরিমাণ সহায়তা করতে হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন।
বুধবার সিনেটের ডেমোক্র্যাট দলের নেতা হ্যারি রেইড এক সংক্ষিপ্ত ভাষনে ইরাকের গৃহযুদ্ধে মার্কিন সেনাদের জড়িত না করার বিষয়ে তার জোড়ালো মত তুলে ধরেন। তবে জেনারেল ডিম্পসে সিনেট প্যানেলকে বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থেই তাদের আইএসআইএসর বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করা উচিত।’
যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যে পারস্য উপসাগরে যুদ্ধবিমানবাহী একটি রণতরি মোতায়েন করেছে৷ পাশাপাশি বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা জোরদারে মেরিন সেনাদের একটি দলও পাঠানো হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, এর আগে অবশ্য ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নূরি আল মালিকির ইসলামি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত ১২ জুন দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানায়, আইএসআইএলের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন মোকাবেলায় গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি ড্রোন ও বিমান হামলার অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মালিকি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তার এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, তারা ইরাকের আভ্যন্তরীণ জটিলতায় নিজেদের যুক্ত করবে না।