বিহারী ক্যাম্প সহিংসতায় হতাহতের কবল থেকে রক্ষা পাননি কালশী বিহারী ক্যাম্পের বায়তুর রহমত জামে মসজিদের খাদিম মোহাম্মদ নাসিম। গত শনিবার ভোরে পুলিশের উপস্থিতিতে বিহারীদের ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ও দোকান লুট করে স্থানীয় দুষ্কৃতিকারীরা। এ সময় তারা বিহারী ক্যাম্প মসজিদের খাদিম নাসিমকেও মারধর করে।
শুধু মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। মসজিদের জিনিসপত্রও লুট করে নিয়ে যায়। মোহাম্মদ নাসিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাকে মারধর করে অথচ পুলিশ তাদের কিছুই বলে নাই। পুলিশ উল্টা বিহারী আদমিদের উপর ফায়ার করে। তারা মসজিদে লুটতরাজ করে দানবাক্স, তিনটি মাউথপিস এবং ব্যাটারি নিয়ে গেছে।’
ক্ষতিগ্রস্ত বিহারীদের দাবি স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার সন্ত্রাসী বাহিনী পুলিশের সহযোগিতায় এ হামলা চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলামেইলকে বলেন, ‘সকালে যখন বিহারীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষ বাধে, তখন কিছু ছেলে-পেলে মসজিদে ঢুকার চেষ্টা করে। খাদিম সাহেব তাদের বাধা দিলে তারা খাদিম সাহেবকে মারধর করে এবং দানবাক্স, ব্যাটারি ও মাউথপিস নিয়ে চলে যায়।’
খাদিম মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এমপি এই মসজিদে অতিথি হিসেবে এসেছেন। মসজিদের উন্নয়নে ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। আর আজকে তারই পোষা গুণ্ডাবাহিনী এসে এই মসজিদের উপর হামলা করলো, সম্পদ লুট করলো এমন কি আমারেও মারধর করলো।’
কথাগুলো বলতে বলতে খাদিম মোহাম্মদ নাসিম আর চোখের জ্বল ধরে রাখতে পারলেন না। তিনি কেঁদে কেঁদে বললেন, ‘আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। তারা (দুষ্কৃতিকারীরা) দুধের বাচ্চারেও পুড়ায় মাইরা ফ্যালাইলো। মহিলা-শিশু কাউরেই রেহাই দেয় নাই।’
মোহাম্মদ নাসিমের জিজ্ঞাসা, ‘পুলিশ কি চাইলে তাগো বাঁচাইতে পারতো না। পুলিশ তাগো না বাঁচায়ে রাস্তার পাশে দাঁড়ায় দাঁড়ায় জুস খাইলো আর তামাশা দেখলো।’
উল্লেখ্য, পল্লবীর কালশীর বিহারিপল্লীতে ১৪ জুন ভোর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে আগুনে পুড়ে ও গুলিতে নিহত হন একই পরিবারের নয়জনসহ মোট ১০ জন। দুষ্কৃতকারীরা বিহারিদের ঘর-বাড়ি ও দোকান-পাটে লুটপাট চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে।