ভয়াল ও নারকীয় পিলখানা বা বিডিআর হত্যাযজ্ঞ দিবস শনিবার। ঢাকার বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞের তৃতীয় বর্ষপূর্তি পালিত হবে এদিন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পিলখানায় বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা বিদ্রোহের নামে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সহযোগিতায় ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে দু’ দিনের এই ভয়াবহ বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু তার আগেই বিডিআর জওয়াদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন সেনাবাহিনীর ৫৭ সেনা অফিসারসহ ৭৫ জন। ঘটনা শুরুর পর থেকে পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টার নারকীয়তা দেশবাসীকে অস্থির করে তোলে। সারাদেশে দেখা দেয় আতঙ্ক-বিমূঢ়তা, নেমে আসে শোক।
২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে শুরু হয়েছিলো এ নৃশংস গণহত্যাযজ্ঞ। সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে দরবার হলে চলমান বার্ষিক দরবারে অতর্কিতে ঢুকে পড়েছিলো একদল বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ান। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা দরবার হলের ভেতরেই রাইফেল তাক করে তৎকালীন মহাপরিচালককে গুলি করে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেছিল।
এরপরই রচিত হয় স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের সবচেয়ে বড় বর্বরতার ইতিহাস। নিরস্ত্র সেনা কর্মকর্তাদের ওপর ভয়ঙ্কর সব আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিডিআরের বিদ্রোহী সৈনিকরা। দ্রুততম সময়ের ভেতর তারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে জিম্মি করে ফেলে।
তিন বছর আগের সেই সব নৃশংসতা জাতির জন্য কলঙ্কিত এক ইতিহাস। মাত্র দু’দিনের নারকীয় নৃশংসতায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ একসঙ্গে ৭৫ জনকে হত্যাযজ্ঞের বীভৎস ইতিহাস নজিরবিহীন।
ভয়াল সে দু’দিনে বিডিআরের কিছু বিপথগামী সদস্যের পৈশাচিকতায় ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় শতাধিক সেনা পরিবার। শতাধিক শিশু হারায় বাবা-মা। অনেক নারী হন স্বামীহারা। খালি হয় অনেক বাবা-মার বুক। আকাশে বাতাসে অনুরণিত হয় সন্তান হারানোর বেদনা।
একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীতে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আলোচনার ঝড় তোলে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের মাত্র দেড় মাসের মাথায় এমন নারকীয় ঘটনা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার , জনগণ সবাইকেই হতচকিত করে তোলে।
একজন মেজর জেনারেল, ব্রিগেডিয়ার কর্নেল, লে. কর্নেল, মেজরসহ ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার লোমহর্ষক সেই কাহিনী আজও অনেককে কাঁদায়। আজও বিডিআর ট্র্যাজেডির সেই দুঃসহ স্মৃতি জীবন্ত হয়ে ভাসে।
পিলখানাকে ঘিরে তিন বছর আগের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি দু’দিন দু’রাত কাটানোর সেই বিরল দুঃসহ স্মৃতি আজও তাড়া করে ফেরে অনেককে। ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি আর গ্রেনেডের শব্দ আজও যেন কানে লেগে আছে তাদের।
এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অনিবার্য সংঘাত থেকে রক্ষা পায় দেশ ও জাতি।
এ ঘটনায় বিডিআরের (বাংলাদেশ রাইফেলস) নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বিজিবি (বর্ডার গার্ডস অব বাংলাদেশ)। বদলে ফেলা হয়েছে সীমান্তরক্ষীদের পতাকা, লোগো ও পোশাকসহ আনুষঙ্গিক সবকিছু। দেশের প্রচলিত আইন-কানুন দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে বিডিআরে সংঘটিত হত্যা-বিদ্রোহের মামলা-মোকদ্দমা। তবে বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে বিডিআর আইনে। কিন্তু খোয়া যাওয়া অনেক অস্ত্রের খোঁজ মেলেনি আজও।
ভয়ঙ্কর ৩৬ ঘণ্টা
বিডিআর সপ্তাহ-২০০৯ এর আনুষ্ঠানিকতা চলছে। পিলখানার সবুজ বিশাল চত্বর সাজানো হয়েছিল দৃষ্টিনন্দন করে। এ কয়েকটি দিনের জন্য মাসখানেক ধরে সেনা কর্মকর্তাদের কমান্ডে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কঠোর অনুশীলন করেছেন বিডিআর সদস্যরা। কিন্তু গভীরে যে কী ভয়াল ষড়যন্ত্রের ছক আঁকা হয়েছিল, তা কেউ ভাবতেই পারেননি।
ঠিক একদিন আগেই পিলখানার বিডিআর সদর দফতরে তিন দিনব্যাপী রাইফেলস সপ্তাহের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘটনা শুরুর দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজনের দ্বিতীয় দিন। শেষ হওয়ার কথা কথা ছিল ডিনার আর সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তার আগেই ২৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে যায় মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ।
সকাল ৯টায় যথারীতি দরবার হলে বসেছিল বার্ষিক দরবার। সারাদেশ থেকে আসা বিডিআর জওয়ান, জেসিও, এনসিওসহ বিপুলসংখ্যক সদস্যে তখন পরিপূর্ণ দরবার হল। মঞ্চে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমদসহ বিডিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আনন্দমুখর এক পরিবেশ। কিন্তু সে আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বিপথগামী একদল বিডিআর জওয়ান বিদ্রোহের নামে মেতে ওঠে মধ্যযুগীয় কায়দায় নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞে।
বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা প্রথমেই দরবার হলের ভেতরেই রাইফেল তাক করে তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমদসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর দরবার হলের বাইরে ও এর আশপাশের এলাকায় সেনা কর্মকর্তাদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করতে থাকে বিদ্রোহীরা। তাদের ব্রাশ ফায়ারে মেধাবী সেনা কর্মকর্তারা একের পর এক লুটিয়ে পড়তে থাকেন।
একদল ঘাতক অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে পিলখানার অভ্যন্তরে বিডিআর মহাপরিচালকের বাসায় ঢুকে তার স্ত্রী ও গৃহপরিচারিকাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। তার বাসায় বেড়াতে আসা স্বজনদেরও হত্যা করা হয়।
নির্বিচারে অত্যাধুনিক অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারান বেসামরিক ও সাধারণ মানুষও। রক্তের বন্যায় ভেসে যায় দরবার হলসহ পুরো পিলখানার সবুজ চত্বর, এমনকি আশপাশের সড়কও।
ব্যারাকের অনেক বিডিআর সদস্যকেও বিদ্রোহে অংশ নিতে বাধ্য করে বিদ্রোহীরা। তারা লুট করে অস্ত্রাগার। হামলা চালায় সেনা কর্মকর্তাদের কোয়ার্টারে। জ্বালিয়ে দেয় সেনা কর্মকর্তাদের গাড়ি। সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের আটক করে কোয়ার্টার গার্ড ভবনে আটকে রাখে। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এমনকি ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ঘটনাও ঘটেছিল সেদিন।
এখানেই শেষ নয়, নরপিশাচরা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের লাশ গুম করতে গণকবর দিয়েছিল, ফেলেছিল ম্যানহোলে।
পিলখানার অভ্যন্তরে যখন নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চলে, ঠিক তখন আরেক ঘাতকদল সদর দফতরের সকল প্রবেশপথ, উঁচু ভবনে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় এবং নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। পরিকল্পিতভাবে একাত্তরের কায়দায় পুরো পিলখানাকেই বধ্যভূমিতে পরিণত করে ঘাতকরা।
পিলখানাজুড়ে তৈরি করা হয় ভীতিকর বীভৎসতা। চারটি প্রবেশ গেট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় গুলি ছুঁড়তে থাকে বিডিআর সদস্যরা।
প্রায় ৩৬ ঘণ্টার বিদ্রোহের পর পিলখানা পরিণত হয় একটি মৃত্যুপুরীতে। শুধু লাশ আর রক্ত। পোড়া গাড়ি, ভাঙা গ্লাস, ঘাসের ভেতর তাজা গ্রেনেড, আর চারদিকে ধ্বংসের চিহ্ন। সেনা কর্মকর্তাদের কোয়ার্টারগুলো তছনছ। বিভিন্ন স্থাপনায় জ্বালাও-পোড়াওয়ের চিহ্ন।
ড্রেন আর ম্যানহোল থেকে ভেসে আসা রক্তের উৎকট গন্ধ। প্রথম দফায় কামরাঙ্গীরচরে একটি সুয়ারেজ লাইন থেকে কয়েক দফায় ৯ সেনা কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হাসপাতালের পেছনে একটি গণকবর থেকে উদ্ধার হয় একসঙ্গে ৩৯টি লাশ। এমটি গ্যারেজ মাঠের পাশের আরো একটি গণকবর থেকে উদ্ধার হয় ৯টি লাশ।
এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, ১ জন সৈনিক ও ২ সেনা কর্মকতার স্ত্রীসহ মোট ৬১ জন শহীদ হন। এছাড়া পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান সাত বিডিআর সদস্য।
বিডিআর সদর দফতরের বিভিন্ন গেট থেকে ফাঁকা গুলি করায় আশপাশের আরো সাতজন পথচারী নিহত হন। এ ঘটনায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৫-এ।
পিলখানায় বিদ্রোহের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশের বিডিআর ক্যাম্পগুলোতেও বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঢাকা ও সাভার ক্যান্টনমেন্ট থেকে একে একে বের হয়ে আসতে থাকে সেনাবাহিনীর সুসজ্জিত যুদ্ধ সাজোয়া যান। পিলখানার আশপাশে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সেনাবাহিনী বন্ধ করে দেয় ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ, নীলক্ষেত, সাইন্সল্যাব, আজিমপুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিস্তীর্ণ এলাকা।
বিদ্রোহের পেছনের কারণ
বিদ্রোহের সূত্রপাতের পর শোনা গিয়েছিল, বিডিআর জওয়ানদের নানা অসন্তোষ আর ক্ষোভের কথা। এমনও শোনা গিয়েছিল যে, ‘অপারেশন ডাল-ভাত’ কর্মসূচিতে পরিচালিত ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলোতেও যে সৈনিকরা দায়িত্ব পালন করতো, তারা লভ্যাংশ না পেয়ে, বাড়তি শ্রমের মূল্য না পেয়ে ক্ষুব্ধ ছিল ডিজির ওপর।
আর বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কারণেই নাকি এ ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছিল ২৫ ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের উদ্ধারকৃত বিকৃত লাশ ও হত্যার ধরণ দেখে বুঝতে কারও বাকি থাকেনি, এটা নিছক বিদ্রোহ নয়, সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যার পেছনে ছিল সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র।
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী অবস্থান
বিডিআর বিদ্রোহের পর ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যেও দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে অনিবার্য গৃহযুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েও স্থিরচিত্তে প্রজ্ঞা, সাহসিকতা ও সিদ্ধান্ত দিয়ে নেপথ্যের কুশীলবদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন।
নানা গুজব, আশঙ্কা ও চাপের মুখেও ধৈর্য, বিচক্ষণতা ও সাহসের চরম পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে।
ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত খুনি বিডিআর সদস্যদের দমনে সেনা অভিযান ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এটা নিশ্চিত হয়েই সরকার রাজনৈতিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অত্যন্ত ধৈর্য ও প্রজ্ঞা নিয়েই প্রধানমন্ত্রী তখন সকল সামরিক অফিসার, গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে বিদ্রোহ দমনে আলোচনার পাশাপাশি দলীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণে চেষ্টা চালিয়ে যান।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী এবং সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে বারবার বৈঠক করেছেন, কথা বলেছেন। পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাজনৈতিক সরকার ও সামরিক নেতৃত্ব একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। এতে পরিস্থিতি মোকাবিলা ও সঙ্কট-উত্তরণ সহজ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী উচ্ছৃঙ্খল বিডিআর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। তার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপি দফায় দফায় বৈঠক করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
এরপরও কাজ না হলে ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিডিআর বিদ্রোহীদের উদ্দেশে চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘আপনারা অস্ত্র সংবরণ করে ব্যারাকে ফিরে যান। অন্যথায় আমি দেশবাসীর স্বার্থে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। আমাকে কঠোর হতে বাধ্য করবেন না।’
প্রধানমন্ত্রীর এ কঠোর বক্তব্যে বিডিআরের উচ্ছৃঙ্খল জওয়ানদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। পরে সেনা অভিযানে নয়, রাজনৈতিক পদক্ষেপেই বিডিআর সদস্যরা অস্ত্র-সমর্পণ করে। পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতেই বিডিআর বিদ্রোহের নামে এ হত্যাযজ্ঞ দমন করে সরকার।
কর্মসূচি
পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে শহীদদের স্মরণে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বিজিবি সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল দশটায় বনানী সামরিক কবরস্থানে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হবে।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিনিধি. স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, তিন বাহিনী প্রধান, বিজিবি প্রধানসহ শহীদদের পরিবারবর্গ। এ সময় শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত করা হবে।
এরপর দুপুর সাড়ে বারোটায় পিলখানাস্থ বিজিবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় একযোগে দেশের সকল বর্ডার অবজর্ভেশন পোস্ট (বিওপি)গুলোতেও দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শুরু হবে।