ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কমিশনের প্রধান আলাউদ্দিন বুরুজেরদি বলেছেন, ১৯৭৯ সালে তেহরানে গুপ্তচরবৃত্তির আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত মার্কিন দূতাবাস দখলের ঘটনা ছিল ইরানের কাছে মার্কিন সরকারের নানা পরাজয়ের যুগান্তকারী অধ্যায়।
১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বরে তেহরানে বিপ্লবী ছাত্রদের হাতে মার্কিন দূতাবাসে হামলা ও অবরোধের বার্ষিকীর প্রাক্কালে তিনি এই মন্তব্য করলেন। দিনটিকে ইরানে ‘সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় সংগ্রাম দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
উল্লেখ্য, ইসলামী বিপ্লবের পরপরই ১৯৭৯ সালের ৪ নভেম্বর ইরানের বিপ্লবী সরকারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বিপ্লবী ছাত্ররা তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখল করে ৫২ জন কূটনীতিককে ৪৪৪ দিন আটক রেখেছিল।
বুরুজেরদি বলেছেন, ওই ঘটনার পর থেকেই বিশ্বে মার্কিন প্রভাব ও প্রতিপত্তি নাটকীয়ভাবে কমে যেতে থাকে এবং বিশ্ববাসীর কাছে এটা স্পষ্ট হয় যে, পরাশক্তির বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়িয়ে অধিকার আদায় করা সম্ভব। বুরুজেরদি বলেছেন, ওই ঘটনার পর ইরান বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধের আদর্শে পরিণত হয় এবং জাতিগুলো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সাহস পায়।
এদিকে ইরানের সাংবিধানিক অভিভাবক পরিষদ গণসংযোগ বিভাগও এক বিবৃতিতে চৌঠা নভেম্বরকে ইরানি যুব সমাজের বিশ্বসাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের উজ্জ্বলতম অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছে। এ বছরের ৪ নভেম্বর মুসলিম জাতিগুলোসহ বঞ্চিত জাতিগুলোর জাগরণের প্রবল জোয়ারে খোদাদ্রোহী ও সাম্রাজ্যবাদী সন্ত্রাসী শক্তিগুলোর আরো একটি জুলুমের প্রাসাদ ধ্বংস হবে বলে পরিষদ আশা প্রকাশ করেছে।
ইরানের রেভ্যুলুশনারী গার্ড বাহিনীও এ ঐতিহাসিক দিবস উপলক্ষ্যে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘মার্কিন সরকারের অপরাধী নেতৃবৃন্দের বিচার এবং ইরানসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সন্ত্রাসী পদক্ষেপ ও সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি তাদের সহায়তার দলিল প্রমাণ ফাঁস করা প্রত্যাশিত বিষয়। ইরানের সুসভ্য জাতি এ বিষয়টিকে বিশ্বে মানবাধিকারের সব সমর্থক ও মুক্তমনা বুদ্ধিজীবী বা চিন্তাবিদসহ আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে ইতিহাসের একটি পরীক্ষা হিসেবে উপস্থাপন করেছে।’’