সরদার ফজলুল করিম আর নেই

সরদার ফজলুল করিম আর নেই

দার্শনিক বুদ্ধিজীবী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিম আর নেই। রাজধানীর পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে শনিবার রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন ফজলুল করিমের জামাতা শাকিল আখতার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি হৃদযন্ত্রের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।image_95959_0

সরদার ফজলুল করিম ১৯২৫ সালের ১ মে বরিশালের আটিপাড়া গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা খবিরউদ্দিন সরদার কৃষিকাজ করতেন। মা সফুরা বেগম ছিলেন গৃহিণী৷ তারা দুই ভাই তিন বোন। সরদার ফজলুল করিমের শৈশবকাল কেটেছে গ্রামে। ম্যাট্রিকুলেশন শেষে তিনি প্রথম ঢাকা আসেন ১৯৪০ সালে।

১৯৪২ সালে তিনি আইএ পাঠ সমাপ্ত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৪৫ সালে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স ও ১৯৪৬ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

সাম্যবাদী বামপন্থি সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত থাকার কারণে পাকিস্তান সরকারের কুনজরে পড়েন তিনি। রাজবন্দি হিসেবে দীর্ঘ ১১ বছর বিভিন্ন পর্যায়ে কারাজীবন বরণ করেন। জেলে থাকা অবস্থাতেই ১৯৫৪ সালে তিনি পাকিস্তান সংবিধান সভার সদস্য হিসেবে কাজ করেন।

পরে ১৯৬৩ থেকে ‘৭১ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি পাকিস্তান হানাদারবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে তিনি আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদান করেন।

শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখালেখি করেছেন জাতীয় অধ্যাপক সরদার ফজলুল করিম। তার উল্লেখযোগ্য অনুবাদ ও রচনার মধ্যে রয়েছে- ‘প্লেটোর সংলাপ’, ‘প্লেটোর রিপাবলিক’, ‘অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স’, ‘অ্যাঙ্গেলসের অ্যান্টি ডুরিং’, ‘নানা কথার পরের কথা’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক’, ‘চল্লিশের দশকের ঢাকা’, ‘নূহের কিশতি’, ‘রুমীর আম্মা’, ‘দর্শনকোষ’, ‘শহীদ জোতির্ময় গুহঠাকুরতা স্মারকগ্রন্থ’, ‘সেই সে কাল’।

স্বাধীনতা ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সরদার ফজলুল করিমের প্রতি বাংলামেইলের পক্ষ থেকে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।

বাংলাদেশ