আল কায়েদা সমর্থিত ইসলামী বিদ্রোহীরা গত বুধবার ইরাকের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলের করার পর রাজধানী বাগদাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ দেশটিতে জঙ্গি ‘আগ্রাসনের’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। আর ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নূরি আল মালিকি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে, ইরাকে জঙ্গি উত্থানের কথা জানিয়ে গত মাসে মালিকি তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে বিমান হামলার আহবান জানালেও ওয়াশিংটন এখন পর্যন্ত তাতে সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলসহ আরো কিছু এলাকা দখলের পর গত বুধবার দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের জন্মস্থান তিকরিত এবং তেল শোধনের জন্য বিখ্যাত বাজি দখল করে নিয়েছে আল-কয়েদা সমর্থিত ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট (আইএসআইএল)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জঙ্গিরা গতকাল চারদিক থেকে হামলা চালিয়ে তিকরিত শহরে ঢুকে পড়ে। পরে একটি পুলিশ স্টেশন জ্বালিয়ে দেয়া হয়। ভারি গোলাগুলোর শব্দ পাওয়া গেছে সেখানে। সালাউ?িদ্দনের প্রাদেশিক সরকারের সদর দপ্তরের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। তবে তাত্ক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
রাজধানী বাগদাদ থেকে মাত্র ১৩০ মাইল উত্তরের বাজি শহরও নিজেদের দখলে নিয়েছে জঙ্গিরা। নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলো জানিয়েছে, জঙ্গিরা গতকাল প্রথমে স্থানীয় উপজাতীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধি দলকে বাজির তেল শোধনাগার কেন্দ্রে পাঠায়। উপজাতি নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর তেল শোধনাগারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ২০৫ জন ?নিরাপত্তা রক্ষী শহর ছেড়ে চলে যেতে রাজি হয়। এর আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ৬০টি গাড়িতে করে বাজি শহরে ঢুকে জঙ্গিরা। এরপর শহরের আদালত ভবন ও থানায় আগুন দেয় তারা এবং বন্দিদের মুক্ত করে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে লড়াইয়ের পর মঙ্গলবার মসুল শহর দখল করে সুন্নি মতালম্বী ইসলামী বিদ্রোহীরা। এর আগে জঙ্গিরা রামাদি ও ফালুজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। বর্তমানে পূর্ব ও পশ্চিম সিরিয়া এবং মধ্য ইরাকের উল্লেখযোগ্য এলাকার নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। শিয়া প্রধানমন্ত্রী মালিকির সরকারের সঙ্গে সংখ্যালঘু সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের সুযোগে তারা ইরাকের একের পর এক শহর দখল করে নিচ্ছে।
ইরাকে এই জঙ্গি ‘আগ্রাসনের’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। ইসলামী বিদ্রোহীদের বিভিন্ন শহর দখলের ফলে লাখ লাখ মানুষের আশ্রয়হীন হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা পরিষদ। এ মুহূর্তে ‘পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
এরকম অবস্থায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামলার মুখে যেসব নিরাপত্তা কর্মী পালিয়ে গেছে অথবা কোনো প্রতিরোধ সৃষ্টি করেনি তাদেরকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।