পানি ও স্যানিটেশন খাতে প্রয়োজন অর্থায়ন ও বিনিয়োগের ন্যায্যতা

পানি ও স্যানিটেশন খাতে প্রয়োজন অর্থায়ন ও বিনিয়োগের ন্যায্যতা

বাংলাদেশ সরকারের বিগত সাতটি অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনায় দেখা গেছে পানি ও স্যানিটেশন খাতে বরাদ্দ গত পাঁচ বছর যাবত ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। জাতীয় বাজেটে পানি ও স্যানিটেশন খাতে ২০১০-১১ অর্থবছরে বিনিয়োগ মোট বাজেটের ২.৩৯ শতাংশ থাকলেও বর্তমান অর্থবছরে তা কমে ১.৬৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সর্বমোট ১৯৯টি প্রকল্পের মধ্যে নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা সম্পর্কিত প্রকল্পের সংখ্যা মাত্র ৪৫টি (২২%)।  image_86036_0

পানি ও স্যানিটেশন খাতে শহর ও গ্রামের বিনিয়োগ বৈষম্য ২০১২-১৩ অর্থবছরে আগের অর্থবছরগুলির তুলনায় কিছুটা কমে এলেও তা এখনো সাম্যভিত্তিক নয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শহর ও গ্রামের বিনিয়োগ অনুপাত ৮৪:১৬। এর আগের দুই বছরে এ অনুপাত ছিল যথাক্রমে ৮৩:১৭ ও ৮১:১৯। তবে উপকূলীয় অঞ্চলের বাজেট বরাদ্দ একেবারেই দৃষ্টিকটু – নগরাঞ্চলের মাথাপিছু বরাদ্দের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ মাত্র। উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানিতে ক্রমান্বয়ে লবনাক্ততা বেড়ে চললেও সরকারী বিনিয়োগ প্রায় স্থবির। ফলে পানি ও স্যানিটেশন  খাতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে – যা উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।

জাতীয় বাজেটে অঞ্চলভিত্তিক বিনিয়োগের ন্যায্যতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বুধবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ওয়াটারএইড ও হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এইচডিআরসি)।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত বাজেট পরবর্তী এক মতবিনিময় সভায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পানি ও স্যানিটেশন খাতে বরাদ্দ বিশ্লেষণের তুলনামূলক এবং সাম্প্রতিক বছরগুলির পানি ও স্যানিটেশন খাতের বিনিয়োগ ও ব্যয় বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এইচডিআরসি)-এর প্রধান উপদেষ্টা (অবৈতনিক) অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

গবেষণায় দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে এ খাতে বরাদ্দের বেশিরভাগই ছিল বড় বড় শহরকেন্দ্রিক। অন্যদিকে, প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চল; যেমন: চর, হাওর, উপকূলীয় অঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকায় নীতি নির্ধারকরা তেমন মনোযোগ দেননি। সাম্যভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ হয়নি। এ অবস্থা উন্নয়নে  ড. আবুল বারকাত “অর্থনৈতিক সামর্থের দিকে লক্ষ্য রেখে পানি ও স্যানিটেশন বাজেটের ন্যায্য বন্টন হওয়া উচিত”- বলে সংবাদ সম্মেলনে মতামত দেন।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশের দেশীয় প্রতিনিধি (ভারপ্রাপ্ত) হাসিন জাহান উপকূলীয় অঞ্চলে পানি ও স্যানিটেশন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ ‘দুর্গম এলাকায় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন কৌশলপত্র ২০১২’ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন ও বিনিয়োগের নায্যতার ওপর জোর দেন।

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য জেলা সংবাদ বাংলাদেশ