প্রসপেক্টাসে তথ্য গোপনের অভিযোগে পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
এসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি এসইসি পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন প্রদান করে।
এসইসি প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে ১২ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন প্রদান করে।
যার ভিত্তিতে ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির আইপিও আবেদন জমা নেওয়া হয়।
সূত্র আরও জানায়, একইসঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে শুনানির জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি বুধবার এসইসিতে ডাকা হয়। কোম্পানিটির পক্ষ থেকে শুনানি তারিখ পেছানোর আবেদন জানালে এসইসি তা আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টায় নির্ধারণ করে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওয়াইস উদ্দীন শুনানির তারিখ পেছোনোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে এসইসির ঘোষিত নোটিশে বলা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) বিধিমালা ২০০৬ এর বিধি ৩(১) অনুসারে কোনও কোম্পানি যে কোনও তথ্য গোপন করলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফৌজদারি, দেওয়ানি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারে।
এছাড়া সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ অনুসারেও এ ধরনের তথ্য গোপন অপরাধ হিসেবে গণ্য। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা এসইসির রয়েছে। তবে কমিশন মনে করে, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আগে কোম্পানিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
সূত্র আরও জানায়, ২০০৪ সাল পর্যন্ত অ্যাকচুরিয়াল ভ্যালুশেন রিপোর্টে পদ্মা লাইফের ৮ কোটি টাকার বেশি লোকসানের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে। তা সত্ত্বেও কোম্পানির পরিচালকরা তাদের ৩ কোটি টাকা মূলধনের ওপর ১৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ বাবদ ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা তুলে নেন। ৩টি খাতে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে কোম্পানির একাধিক প্রকল্প থেকে ওই পরিমাণ টাকা নেওয়া হয়।
এই অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৭ সালের ৩০ এপ্রিল কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করে তৎকালীন বীমা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান। কোম্পানির পরিচালকরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন। যা এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
কিন্তু কোম্পানির আইপিওর জন্য প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। এ কারণে গত ৭ ফেব্রুয়ারি এসইসি পদ্মা লাইফকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এসইসি।