মিয়ানমারের কাছে অনেক জিজ্ঞাসা বাংলাদেশের

মিয়ানমারের কাছে অনেক জিজ্ঞাসা বাংলাদেশের

১৯৪৭ সালের জেনেভা কনভেনশন মোতাবেক সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সেনা মোতায়েন নিষিদ্ধ থাকলেও মিয়ানমার কেন বারবার সেনা মোতায়েন করছে?

বিজিপি কেন ২৮ মে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে টহলরত বিজিবি’র  ওপর গুলিবর্ষণ করলো- যাতে নায়েক মিজানুর মারা যান, সে লাশ ফেরত চাইতে যাওয়া বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে কেন গুলিবর্ষণ-মর্টার শেল নিক্ষেপ?

এমন ৯টি এজেন্ডা নিয়ে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী বিজিবি-বিজিপি মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদোতে শুরু হয়েছে।

দুই দেশের এই সীমান্ত সম্মেলনে চোরাচালান-ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য পাচার রোধ ও উভয় দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হবে।

সীমান্ত সম্মেলনে আট সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দিচ্ছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ। দলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা এবং মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাও রয়েছেন।  image_85826_0

মিয়ানমারের পক্ষে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

বিজিবির একটি সূত্র জানিয়েছেন, চারদিনের সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকবেন এবং বৃহস্পতিবার সীমান্ত সম্মেলনের আলোচনার যৌথ দলিল জেআরডি (জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন্স) সই হবে।

সফরকালে বিজিবি মহাপরিচালক মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং ইমিগ্রেশন ও ন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন বিভাগের মহাপরিচালকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।

এ সম্মেলনের পর আগামী ১৮ জুন ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের অষ্টম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ১৯৮০ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত চুক্তি সম্পাদিত হয়। ওই চুক্তি অনুয়ায়ী দুই দেশে নিজ নিজ সীমান্তের শূন্যরেখার তিনশ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা তৈরি করতে পারবে না।
চুক্তি সম্পাদনের পর মিয়ানমার একাধিকবার সীমান্তের শূন্যরেখা চুক্তি লঙ্ঘন করে। চুক্তির শর্ত ভেঙে মিয়ানমার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আশারতলী সীমান্তের চারটি ক্যাম্প স্থাপন করে।

তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয় এবং বাংলাদেশ পাল্টা ক্যাম্প স্থাপন করার হুমকি দিলে মিয়ানমার তাদের ক্যাম্প সরিয়ে নেয়। অনুষ্ঠিত সীমান্ত সম্মেলনে প্রথমেই শূন্যরেখা চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইবে বাংলাদেশ।

সূত্র আরো জানায়, মিয়ানমারের বেশ কিছু ইয়াবার কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় ১৩ ধরনের ইয়াবা তৈরি হয়। মংডু থেকে সাবরং হয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা ঢোকে। ইয়াবার কারখানা ও বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারে প্রত্যক্ষ সহায়তা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে মিয়ানমারের বিভিন্ন সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে।

সেখানকার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, রাজস্ব কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন বাহিনীর মাধ্যমে এ দেশে ইয়াবা পাচার হয় বলে তথ্য পাওয়া যায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মংডু এলাকার ৩৭টি কারখানার অবস্থান জানতে পেরেছে বাংলাদেশ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এর একটি তালিকাও করা হয়েছে। সেটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে মিয়ানমারে। এ ব্যাপারে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ