স্থলবন্দর বেনাপোলে চলছে রাজস্ব ফাঁকির রমরমা বাণিজ্য। এর ফলে দিনদিন রাজস্ব ঘাটতি বেড়েই চলেছে।প্রতিদিন এই বৃহত্তম বন্দর দিয়ে ৫শ গাড়ি আমদানি-রপ্তানি হয়। আর মালামাল বন্দরে লোড হওয়ার আগে থেকে চলে কাস্টমস অফিসারদের সঙ্গে শুল্ক ফাঁকির দেন দরবার।
বেনাপোল বন্দরে শুল্ক ফাঁকি বেড়ে যাওয়ায় ২০১১-১২ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল ১শ ৯৪ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ৪শ ৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৪শ ২৪ কোটি টাকা। এবার ও লক্ষমাত্রা পূরণ হবার কোনো আশা দেখা যাচ্ছে না।
বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ আমদানিকারক ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি অনিয়ম হলেও বেনাপোল বন্দরে এর হাওয়া লাগেনি।
বন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তারা জাল-জালিয়াতির মাধ্যেমে বিভিন্ন অনিয়ম করে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। তাদের কারণে বেনাপোল বন্দর থেকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এখানকার সচেতন ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিরা জানান, সরকারের কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে ঘুষ বাণিজ্য বেড়ে যাওয়ায় সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব।
সরকারি রাজস্ব ফাঁকির জন্য এখানে বারবার কাস্টমস কর্মকর্তাদের বদলি করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজস্ব ফাঁকির প্রবণতা।
২০১২ থেকে ১৪ অর্থবছর পর্যন্ত বেনাপোল স্থল বন্দরে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫ শতাধিক পণ্য চালান জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী লোকদের মাধ্যমে গোপন সমোঝতায় বা হুমকির মাধ্যমে এদের ছেড়ে দেয়া হয়।
কাস্টমস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবৈধ আয়ের একটি বড় উৎস নন পিসিআই ও বন্ডের মাধ্যেমে আমদানি করা পণ্য চালান থেকে। সিএফ ছাড়াই বছরে গড়ে প্রায় ১৫ হাজারের ও বেশি চালান এভাবে আমদানি হচ্ছে আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে। বন্ডের মাধ্যমে কমপক্ষে ১০ হাজার চালান আমদানি হচ্ছে। প্রতিটি চালান থেকে ১০ হাজার টাকা কমিশন বা ঘুষ হিসাবে নিলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১শ ২৫ কোট টাকা।
কাস্টমস কর্মকর্তারা তাদের আয়ের জন্য এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা চালু করে নিজেদের স্বার্থরক্ষা করে চলেছে।