বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দুই পক্ষের শক্তি বৃদ্ধি

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দুই পক্ষের শক্তি বৃদ্ধি

bgb_dবাংলাদেশের বান্দরবানের কাছে  মিয়ানমার সীমান্তে দুদেশের সীমান্তরক্ষীদের গোলাগুলি এবং একজন বিজিবি সদস্য নিহত হবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বিজিবির একজন কর্মকর্তা লে: কর্ণেল শফিকুর রহমান বলেছেন, ওই এলাকায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবির উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন, সীমান্তের অপর দিকে মিয়ানমার সামরিক উপস্থিতিও বেড়েছে বলে তারা আভাস পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, তারা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি আছেন।

এর মধ্যে নিহত বিজিবি সদস্য নায়েক মিজানুর রহমানের মৃতদেহ রোববার ময়না তদন্তের জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি নিয়ে আসা হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে শনিবার তলব করে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বান্দরবানের সীমান্ত এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই দুদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকলেও, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বিবিসিকে এর আগে জানিয়েছিলেন যে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এসেছে।

বিজিবির মহাপরিচালক জানান, নিয়মিত টহলের সময় কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়াই মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীরা বিজিবির টহল দলের ওপর গুলি করতে শুরু করলে উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে। গুলি বর্ষণের পর সেখান থেকে বাংলাদেশী রক্ষীরা চলে আসে এবং দেখা যায় যে একজন রক্ষী নিখোঁজ রয়েছেন। পরে সেখানে বিজিবির লোকেরা ফিরে গিয়ে রক্তের দাগ দেখতে পান।

তিনি বলেন, অন্যান্য আরো কিছু বিষয় বিবেচনা করে বিজিবির ধারণা হয় যে সীমান্ত রক্ষী মিজান আহত হয়েছেন এবং মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী তাকে সেখান থেকে নিয়ে গেছে। বিজিবির পক্ষ থেকে সাথে সাথেই তার প্রতিবাদ করে নায়েক মিজানকে ফেরত চাওয়া হয়।

তাৎক্ষণিক-ভাবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় কূটনৈতিক পর্যায়ে তৎপরতা চালানো হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ এক পর্যায়ে স্বীকার করে যে তাদের কাছে একটি মৃতদেহ রয়েছে। বিজিবির একটি দল পরে জিরো ল্যান্ডের ওপারে গিয়ে এই মৃতদেহ শনাক্ত করে।

মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে মৃতদেহটি রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন বা আরএসও-র এক জঙ্গির। মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যমেও বলা হচ্ছে, এই সংঘর্ষের সাথে আরএসওর জঙ্গিরা জড়িত।

সপ্তাহখানেক আগে কথিত আরএসওর সদস্যদের গুলিতে বার্মার চারজন পুলিশের নিহত হবার এক ঘটনা বাংলদেশ-বার্মা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ফ্ল্যাগ মিটিংএ উল্লেখ করা হয়। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বার্মা সীমান্তের ভেতরেই আরএসওর সদস্যরা সক্রিয় থাকতে পারে।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের মাটিতে এধরনের সংগঠনের কোন অস্তিত্ব নেই। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত কোন তথ্য থাকলে মিয়ানমারের কাছে সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ।

সবশেষ এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীমান্তে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আগে এরকম ছিলো না। সম্প্রতি এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তবে তিনি বলেন, এধরনের পরিস্থিতিতে ভারতের সাথে যেমনটা যোগাযোগ করা যায় মিয়ানমারের সাথে সেই যোগাযোগটা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

দুটো দেশের মধ্যে আলোচনার জন্যে বিজিবির মহাপরিচালক আগামী মাসে মিয়ানমারে যাচ্ছেন। সূত্র:- বিবিসি।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর