যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি কাদের মোল্লার। জাপান সফর শেষে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে এমনটিই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন,”আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, কারো কথায় পিছ পা হইনি।”
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সঠিক সময়ে হবে। আইনের নিয়ম-নীতি মেনেই তাদের বিচার সম্পন্ন করা হবে। এ নিয়ে অধৈর্য হওয়ার কিছুই নেই। আপনারা আমার ওপর আশ্বস্ত থাকতে পারেন।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। পরে তারা এই নির্বাচন বৈধ নয় এবং এর মধ্য দিয়ে গঠিত সরকারও বৈধ নয় বলে দাবি করে। বিএনপির সমালোচনার জবাবে জিয়াউর রহমানের সময় দলটি গঠনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মোশতাক আহমেদের হাত ধরে জিয়ার ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠার ইতিহাস সবার জানা। সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করছে কে, কারা? তাদের বৈধতা কী? বৈধতার প্রশ্ন যাদের জন্মে, তারা অবৈধ বলে কিভাবে?”
শেখ হাসিনা বলেন, “৪০ ভাগ ভোটার ভোট দেওয়ার পর কেন নির্বাচন বৈধ হবে না? বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি সংবিধানেই রয়েছে।”
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে তিনি বলেন, “উনারা এলেই তো হতো। ইলেকশন না করার সিদ্ধান্ত তাঁর দলের। কোনো রাজনীতিক যদি ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, সে ভুলের খেসারত তাকে দিতে হবে। যারা বৈধতার প্রশ্ন আনে, তাদের জন্ম অবৈধভাবে। যাদের জন্ম অবৈধভাবে, তারা সব অবৈধ দেখে।”
জাপানে চার দিনের এই সফর সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ৬০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাপান সরকার। এ ছাড়া গঙ্গা ব্যারেজ, যমুনা নদীর নিচে বহুমুখী টানেল, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে রেল সেতু নির্মাণ, ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস এবং ঢাকার চারটি নদী পুনরুদ্ধারসহ কয়েকটি বড় প্রকল্পে দেশটির সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
২৪ মে দিনগত রাত ১২টায় চারদিনের সরকারি সফরে জাপান যান প্রধানমন্ত্রী। সফরে তার সফরসঙ্গী ছিলেন ১০৯ জন। সফরকালে জাপানের সম্রাট আকিহিতো, প্রধানমন্ত্রী শিন জো অ্যাবের সাথে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী।