বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, সম্পূর্ণ উস্কানিমূলকভাবে মায়ানমারের বিজিপি সদস্যরা বিজিবির টহল দলের ওপর হামলা চালায়।
মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) হামলায় বিজিবি সদস্য নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মে. জেনারেল আজিজ।
বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশে হামলা চালানোর কোনো সুযোগ নেই বলে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) ঘাঁটি থাকার ব্যাপারে মায়ানমারের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভূখন্ডে আশ্রয় নিয়ে প্রতিবেশী দেশে হামলা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা তাদের বলেছি, দেশে আরএসও কোনো ক্যাম্প থাকলে তথ্য দেন। আমরা তাদের বিতাড়িত করবো।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মিয়ানমারের কারণেই সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করে। তাদের কারণেই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, দু’দেশের সীমান্তের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে চাইলে তাদের (মিয়ানমার) পক্ষ থেকে কখনই কোনও সাড়া পাওয়া যায় না।
বুধবার নায়েক মিজানের নিখোঁজ ও তার নিহত হওয়ার বিষয়ে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে বিজিবির একটি টহল দল পাইনছড়ি এলাকার ৫২ নং বর্ডার পিলার (বিপি) এলাকায় টহল দেয়ার সময় কোনো প্ররোচনা ছাড়াই মায়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়।
এ সময় দলের অন্যান্য সদস্যরা পিছু ফিরে আসলেও নিখোঁজ হয় নায়েক মিজান। আমরা পাইনছড়ির ৫২ নং পিলারের কাছে গিয়ে দেখি, সেখানে গুলি লেগে নষ্ট হওয়া একটি মোবাইল ফোন পড়ে আছে, আর রক্তের ধারা চলে গেছে মায়ানমারের দিকে।
এরপর মায়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নিখোঁজ নায়েক মিজানকে ফেরত চাওয়া হয়।
গত পরশুদিন তারা জানায় তাদের কাছে ডেডবডি আছে। তারা লাশ ফেরত দিতে চাইলে শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে ৫২ নং পিলারের কাছে যায় বিজিবির একটি দল। কিন্তু তাদের ওপর এ সময় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোঁড়ে তারা। জবাবে আমরাও পাল্টা গুলি চালাই।
এ সময় চারজন বিজিবি সদস্য হারিয়ে যায়। অবশ্য পরে তাদের উদ্ধার করা হয়।
অবশেষে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের পর বিকাল পৌনে ৬টার দিকে নায়েক মিজানের লাশ ফেরত দেয় মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
একজন মেজরের নেতৃত্বে বিজিবির একটি দল লাশ গ্রহণ করে। তবে তার সঙ্গে থাকা অস্ত্র ফেরত দেয়নি মায়ানমারে সীমান্তরক্ষীরা।