মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের সংবর্ধনা ক্রেস্টে স্বর্ণ জালিয়াতির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে কথায় আছে স্বর্ণকার মায়ের গহনা বানালেও সেখান থেকে স্বর্ণ চুরি করে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য বিদেশীদের সম্মান দিয়েছি সেটাই বড় কথা। কোন ক্রেস্টে কত তোলা স্বর্ণ ছিলো তা তো মেপে দেখা হয়নি। আর এ বিষয়টি নিয়ে অযথা হইচই করা হচ্ছে। বেশী হইচই হলে নিজ দেশের সম্মান কমবে। নিজেদের চুর বলে প্রমাণিত করা হবে।
শনিবার বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার রায় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসি ঠেকাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ফোন করেছিলেন। বাংলাদেশের কোন লোকটা আছে এ ধরণের ফোন পাওয়ার পরেও নিজের সিদ্ধান্তে কাজ করে। প্রভাবশালী অনেকেই চাপ দিয়েছেন। কয়জনের এমন সাহস থাকে। থাকে শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যার।
তিনি বলেন, আমাকে প্রশ্ন করে লাভ নেই। যেটা করার সেটা করবো। অন্যায়কে প্রশ্রয় দেইনা। বিচার চলছে, বিচার হবেই। আমার সময় মতো আমাকে কাজ করতে দিন।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সেটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। ভুল সিদ্ধান্ত নিলে তাদের ভুলের খেসারত দিতে হবে। তারা আন্দোলন করে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল। জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি।
র্যাব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, র্যাব এখন একটি বাস্তবতা। যে কেউ চাইলেই হুট করে একে বাতিল করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা স্বীকার করছি- র্যাবের অনেক ভুল রয়েছে। কিন্তু অনাকাঙ্খিত ঘটনার সাথে সাথেই আমরা তদন্ত করেছি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু কেউ কেউ আমাদের থেকে দুই লাইন বেশি এগিয়ে গিয়ে এমন পরিবেশ তৈরি করে যে, আমরা তখন আর স্বচ্ছন্দে কাজ করতে পারি না।
শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে যারা রক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে এতো কথা বলেছিল তারাই র্যাব গঠন করে আমাদের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল। তারাই অপারেশন ক্লিন হার্ট অভিযানের নামে আমাদের দেড় শতাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। কই তখন তো এতো উচ্চবাচ্য হয়নি।
তিনি বলেন, র্যাবের অনেক সফলতাও রয়েছে। তারা অনেক ভালো ভালো কাজ করেছে- সেই বিষয়টাও সামনে রাখতে হবে।
এ সময় তিনি হাইকোটের্র গঠিত বেঞ্চের সমালোচনা করে বলেন, সব কাজ যদি হাইকোর্টের বেঞ্চই করে দেয় তাহলে আমাদের তো আর কিছুই করার থাকে না।
জাপান সফর প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জাপান সফর সফল হয়েছে। এ সফরের মধ্য দিয়ে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। সফরকালে দুই দেশ যৌথ ইশতেহারে সই করেছি। জাপানের দেয়া ৬শ কোটি ডলার উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হবে।
তিনি জানান, জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সফরকালে দুই দেশের মধ্যেকার দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ের অর্জন নিয়ে কথা বলেন। জাপানের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।