একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার ফরমাল চার্জের সঙ্গে দেওয়া বিভিন্ন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করবেন প্রসিকিউটাররা।
শেষ দিনের মতো বুধবার সকাল পৌনে এগারোটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম।
এদিকে গোলাম আযমের জামিনের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম।
এর আগে প্রথম দিনে গত বুধবার অভিযোগ উপস্থাপন শুরু করেন প্রধান প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু।
১৯১ পৃষ্ঠার মধ্যে ওইদিন প্রায় ৪৪ পৃষ্ঠা পড়ে শোনানোর পর ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার পুনরায় অভিযোগ উপস্থাপনের সময় নির্ধারণ করেন। কিন্তু ওই দিন সময় না পাওয়ায় উপস্থাপন হয়নি।
পরে রোববার ও সোমবার অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়।
গোলাম আযমের অনুপস্থিতিতে অভিযোগ উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ, একেএম সাইফুল ইসলাম ও নুরজাহান মুক্তা।
বিকালে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ১৯১ পৃষ্ঠার ফরমাল চার্জ উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রæয়ারি ফরমাল চার্জের সঙ্গে দেওয়া বিভিন্ন ডকুমেন্ট আমরা উপস্থাপন করবো। এর মধ্যে সিডি ও ডিভিডিও রয়েছে। ১৯৭১ সালে অপারেশন সার্চলাইট, গণহত্যা ও ধর্ষণের বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদ আমরা সংগ্রহ করেছি। এর সংখ্যা প্রায় এক হাজারের মতো। তবে আমরা সবগুলো সংবাদ উপস্থাপন করবো না। কিছু সংখ্যক উপস্থাপন করবো। এছাড়া যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর এটলার্জ স্টিফেন জে র্যাপ আমাদেরকে কিছু দালিলিক তথ্য দিয়েছেন। সেগুলোও ২৭ ফেব্রæয়ারি আমরা আদালতে উপস্থাপন করবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইদানিং গোলাম আযমের পরিবার ও আইনজীবীরা দেশ-বিদেশের মিডিয়ায় মিথ্যাচার করছেন। ডাক্তাররা বলেছেন, তিনি সুস্থ। অথচ এখনো তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।’
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৬২টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা ও তাদের সঙ্গে চক্রান্ত করার জন্য ছয়টি, তাদের সঙ্গে পরিকল্পনার তিনটি, উস্কানি দেওয়ার ২৮টি, তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ২৪টি এবং ব্যক্তিগতভাবে হত্যা ও নির্যাতনের একটি অভিযোগও রয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের আদেশ অনুযায়ী গত ১১ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলেন গোলাম আযম। ট্রাইব্যুনাল সে আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠান।