ইয়েমেনে গতকাল মঙ্গলবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে। ৩৩ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর শাসনের অবসান ঘটাতে এই গণভোট ধাঁচের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে একমাত্র প্রার্থী ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ্রাব্বুহ মানসুর হাদি। ইয়েমেনই আরব বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান হয়েছে। আরব উপদ্বীপের দরিদ্রতম দেশটিতে এক বছর আগে সরকারবিরোধী সহিংস গণ-আন্দোলন শুরু হয়।
গতকাল স্থানীয় সময় সকাল আটটায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নারী ও পুরুষদের আলাদা সারিতে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে।
ইয়েমেনে যোগ্য ভোটার রয়েছে এক কোটি ২০ লাখের বেশি। এর মধ্যে ২০০৬ সালের নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা এক কোটি। বাকি ২২ লাখ ভোটার নতুন নিবন্ধিত হয়েছেন। গতকাল ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয় ভোটারের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখা যায়।
ইয়েমেনে বিপ্লবের কেন্দ্রবিন্দু বলে পরিচিত চেঞ্জ স্কয়ারের কাছে উত্তরাঞ্চলীয় একটি এলাকার নারী ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আবির আফিফি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র খোলার আগেই ভোটকেন্দ্রে বিপুলসংখ্যক নারী ভোটারের উপস্থিতি দেখে অবাক হয়েছি।’
সাংবাদিকেরা জানান, দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী এডেনেও ভোটারদের ছোট ছোট দলে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেখা যায়। ভোটের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল হাদিকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসার সুযোগ করে দেবে। এতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দুই বছরের জন্য দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে নতুন করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসবেন।
উদ্যাপন দিবস: ইয়েমেনের নোবেল শান্তিজয়ী তাওয়াক্কুল কারমান এই ভোটের দিনকে ‘উদ্যাপন দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘ইয়েমেনি জনগণের জন্য আজকের দিনটি উদ্যাপন দিবস। কারণ এটি আলী আবদুল্লাহ সালেহর বিদায়ের দিন। এই দিনটির মাধ্যমে সালেহর দমন-পীড়নের অবসান ঘটবে।’
হামলায় সেনা নিহত: গতকাল দক্ষিণাঞ্চলীয় মুকাল্লা নগরের একটি ভোটকেন্দ্রে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এএফপি।