অস্ট্রেলিয়ার একটি খনি থেকে একটি বিরল প্রজাতির দুর্লভ গোলাপি হীরক খণ্ড পাওয়া গেছে। এটি অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গোলাপি (পিংক) হীরা বলে দাবি করেছে এর আবিষ্কারক খনি কোম্পানিটি।
প্রায় ১২ দশমিক ৭৬ ক্যারেটের বিরল এই হীরক খণ্ডটি অস্ট্রেলীয় কোম্পানি রিও টিন্টোর আরগাইল হীরক খনি থেকে আবিষ্কার করা হয়। আরগাইল হীরক খনিটি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ইস্ট কিম্বার্লি অঞ্চলে অবস্থিত।
হীরকটি নাম রাখা হয়েছে ‘আরগাইল পিংক জুবিলি’। এর বর্তমান বাজার মূল্য কয়েক মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরে হীরক খণ্ডটি কাটা হচ্ছে। চলতি বছর শেষ নাগাদ বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে তোলার আগে এটিকে নিউইয়র্ক, হংকংসহ পৃথিবীর প্রায় সব বড় শহরে প্রদর্শন করা হবে।
পার্থে এটির কাটার কাজ মঙ্গলবারে শুরু হলেও, কাজ শেষ করতে আরও ১০ দিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হীরক খণ্ড কাটার পদ্ধতি একটি সুক্ষ্ম শিল্প। কাটার সময় একটু হিসেবের ভুল হলেই একটি হীরক খণ্ড তার মূল্য হারাতে পারে।
‘আরগাইল পিংক জুবিলি’ হীরাটিকে চূড়ান্তরূপ দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক হীরক বিশেষজ্ঞদের একটি দল এর সঠিক মূল্য নির্ধারণ করবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশ গোলাপি রংয়ের হীরা আরগাইল খনি থেকে উৎপন্ন হয় বলে এক বিবৃতিতে জানায় রিও টিন্টো কর্তৃপক্ষ।
হীরকটি সৌন্দর্য ও মান অভূতপূর্ব বলে উল্লেখ করেন রিও টিন্টোর একজন মুখপাত্র। ‘এটা আবিষ্কারের জন্য আরগাইল কোম্পানিকে দীর্ঘ ২৬ বছর প্রতীক্ষা করতে হয়েছে। আমরা এ ধরনের হীরা আগে কখনও দেখিনি।’ হীরাটির ব্যাপারে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন আরগাইল পিংক ডায়মন্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপক জোসেফিন জনসন।
কর্তৃপক্ষ দাবি করে, এর বর্ণ পৃথিবীর আরেকটি বিখ্যাত হীরক খণ্ড উইলিয়ামসন পিংকের মতই গোলাপি।
উইলিয়ামসন পিংক হীরাটি আফ্রিকার তানজানিয়ার একটি খনি থেকে আবিষ্কার করা হয়। ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হীরাটি বিয়ের উপহার হিসেবে পান।
পৃথিবীতে অভিজাত এবং সৌখিন ধনীদের কাছে হীরার কদর সবসময়ই আলাদা। হীরা তাদের কাছে সবসময় ক্ষমতা এবং আভিজাত্যের প্রতীক। ধারণা করা হয়, পৃথিবী খ্যাত হীরক কোহিনুর লুট করার জন্যই পারস্য অধিপতি নাদির শাহ দিল্লি আক্রমণ করেছিলেন।
আধুনিক যুগেও হীরার কদর একটুও কমেনি। ‘ফ্যান্সি ইনটেন্স পিংক’ নামের একটি দুর্লভ হীরা ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত একটি নিলামে রেকর্ড চার কোটি ৬০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো অলঙ্কার এত অর্থ দিয়ে কেনা হয়নি।