ইউটিউব অনেককেই বিখ্যাত করে দিয়েছে। হঠাৎ আপলোড করা কোনো ভিডিও দৃশ্যবার্তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে গেছে লাখ লাখ মানুষের কাছে। ১০ বছর বয়সী শিশু রবি নোভাক তেমনই এক ইউটিউব সেলিব্রেটি। গায়ে কালো সুট, লাল রঙের টাই গলায় ইন্টারনেটে হাজির হয়ে নোভাক বয়ান করে চলে, কীভাবে আমার দৈনন্দিন জীবনযাপনকে আরও একটু অসাধারণ, অনন্য করা যায়। হাড়ের ভয়ানক এক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত তামাটে বর্ণের এ শিশু যখন বড় বড় মায়ামাখানো চোখ নিয়ে, প্রেসিডেন্সিয়াল সাজ দিয়ে উৎসাহজাগানিয়া কথা বলে চলে, তখন চোখের পানি ধরে রাখা দুষ্কর। ইউটিউবে রবি নোভাকের প্রচারিত একটি ভিডিও প্রায় ৩২ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। যেটা অনেকের জন্য অসম্ভব তো বটেই, অকল্পনীয়ও। ইউটিউবে নোভাকের এ তুমুল জনপ্রিয়তা তাকে সবার কাছে ‘কিড প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে পরিচিত করে তোলে।
পুঁচকে ‘প্রেসিডেন্ট’
ছোটবেলা থেকেই অসুস্থ নোভাক অস্টিওজেনেসিস ইমপারফেক্টিয়া (ওআই) নামের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। এটা হাড় এতটাই নরম করে ফেলে যে, মানুষ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়তে পারে। ভয়ঙ্কর এ অসুস্থতা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা এ মার্কিন শিশুটির প্রাণশক্তি দেখে অসংখ্য মানুষের মতো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও রীতিমতো অবাক! আর হবেনই না কেন! ২০০৪ সালে হাসপাতালের বেডে ভর্তি হওয়া এ শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গার হাড় ৭০ বারের মতো ভেঙে পড়েছে। কিন্তু সার্জারির টেবিল, বড় বড় অপারেশন, মুঠোভর্তি তিন বেলা ওষুধ, স্থবির শৈশবসহ কোনো প্রতিকূলতাই তার শৈশবকে কেড়ে নিতে পারেনি। আর পাঁচটা শিশুর মতো সাইকেল চালানোর চেষ্টা করা, ছবি আঁকা, ফুরসত পেলে ঘুরতে যাওয়া রবি নোভাকের নিত্যদিনের কাজ।
এসব কারণে ২০১৩ সালে পুঁচকে এ প্রেসিডেন্টের জায়গা হয় হোয়াইট হাউসের সুরম্য ভবনে, আর সঙ্গী হিসেবে ছায়ার মতো থাকেন বারাক ওবামা। ওবামার চেয়ারে বসে ফোনে কথা বলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে নানা ধরনের আলাপেরও সুযোগ হয় তার এ সময়। মধুর আলাপচারিতায় দুজনের মধ্যে সখ্যও গড়ে ওঠে! ওবামা নোভাককে একই সঙ্গে একজন ‘প্রেসিডেন্ট’ ও তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী হিসেবে সফল বলে উল্লেখ করেন।