আরও চার ম্যাচ বাকি। কিন্তু ছয় ম্যাচের ছয়টিতেই হারা সিলেট রয়্যালসের কাছে এই চার ম্যাচ বলতে গেলে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। দলের এমন ব্যর্থতায় ক্ষোভের আগুন জ্বলছে সিলেটে, হতাশায় ডুবেছেন খেলোয়াড় আর ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্মকর্তারাও। আইকন খেলোয়াড় অলক কাপালি কথা বলেছেন এসব নিয়েই
এখনো একটাও ম্যাচ জিততে পারল না সিলেট রয়্যালস। কতটা হতাশ?
অলক কাপালি: আসলে জেতা উচিত ছিল, এমন কয়েকটি ম্যাচেও আমরা হেরে গেছি। একটা ম্যাচে যেমন ২ রানে হেরে গেলাম। সেটার জেরেই পরের ম্যাচে খুব বাজে ব্যাটিং করেছি। ক্লোজ ম্যাচ জিততে পারছি না, এটা নিয়ে চিন্তা করতে করতে অন্যদিকে সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। বিপিএলের প্রথম আসরে ভাগ্যই বোধ হয় আমাদের সঙ্গে নেই।
এটা ছাড়া ব্যর্থতার আর কী কারণ দেখেন?
অলক: টি-টোয়েন্টি ফর্মে থাকা খেলোয়াড়দেরই খেলা। দলগুলোও এমন খেলোয়াড়ই চায়। আমাদের এই জায়গাতে সমস্যা আছে। দু-তিনজন খেলোয়াড় ফর্মে নেই। এ ছাড়া বিদেশি খেলোয়াড় বলেন বা দেশি খেলোয়াড়, অনেকেই ভালো খেলছে না। খেলোয়াড়েরা পারফর্ম করছে না বলেই দলের এই অবস্থা।
আপনার নিজের কী অবস্থা? নিজের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট?
অলক: ঢাকা লিগে রান পাইনি, ভেবেছিলাম বিপিএলে ধারাবাহিকভাবে রান করব। এ ধরনের ক্রিকেটে আগেও রান করেছি। তো এবার প্রথম ম্যাচে ফিফটি, পরের ম্যাচে অপরাজিত ৩৪, মোটামুটি সন্তুষ্টই বলতে পারেন। সর্বশেষ দুই ম্যাচ ছাড়া প্রতিটি ম্যাচেই আমি ভালো করেছি।
প্রথমে পিটার ট্রেগোকে দলের অধিনায়ক করা হলো। পরে আবার নেতৃত্ব দেওয়া হলো আপনাকে। এসব বিষয়ও কি আপনাকে অস্বস্তিতে রেখেছিল?
অলক: দেখেন, টি-টোয়েন্টিতে আমি সেভাবে কখনোই অধিনায়কত্ব করিনি। এবারও করতে চাইনি, সিদ্ধান্তটা আমারই ছিল। এবার অধিনায়কত্ব করতে না চাওয়ার কারণ, ২০ ওভারের ক্রিকেটে অনেক চাপ থাকে। এ কারণেই ভেবেছিলাম, চাপমুক্ত থেকে খেলতে পারলে আমারই ভালো হবে।
কিন্তু গত ম্যাচে তো আপনিই অধিনায়কত্ব করলেন। পিটার ট্রেগো দল থেকেই বাদ…
অলক: ট্রেগোকে না খেলানোর কারণ আমাদের পেস আক্রমণে রাজুকে (আবুল হাসান) ফেরানো হয়েছিল। সঙ্গে সোহেল তানভির আছে। দুজন পেসার খেলানোর সিদ্ধান্ত ছিল, সঙ্গে নতুন আরও দুজন বিদেশি আসায় টিম কম্বিনেশনের কারণেই ট্রেগো খেলেনি।্রতখন ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে আমাকে বলা হয় অধিনায়কত্ব করতে। আমিও ভাবলাম, কিছুতেই যখন কিছু হচ্ছে না, একটু চেষ্টা করে দেখি।
সিলেট রয়্যালসের ব্যর্থতায় সিলেটের মানুষ খুব ক্ষুব্ধ। তাদের উদ্দেশে কী বলবেন?
অলক: সিলেটে এ নিয়ে অনেক কিছুই হচ্ছে শুনেছি। সবাই দেখছে সিলেট ভালো খেলছে না, সে কারণে তাদের হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা তো চেষ্টা করেছি। প্রথমবার বলেই হয়তো সব গুছিয়ে উঠতে পারিনি। এটা নিশ্চয় তারাও বোঝে।
ক্ষোভের প্রকাশ নিশ্চয়ই আপনার কাছেও হয়। পরিবারের লোকজন বা বন্ধুবান্ধব কী বলেন?
অলক: সিলেটের বেশির ভাগ মানুষ, বিশেষ করে, স্থানীয় কোচ-খেলোয়াড়েরা মনে করছেন ভাগ্যই আমাদের সহায় হচ্ছে না। প্রথম ম্যাচে যেমন ১৬৫ করেও গেইলের জন্যই হেরে গেলাম। গত ম্যাচের আগের ম্যাচে ২ রানে হেরেছি। রাজশাহীর সঙ্গেও ক্লোজ ম্যাচে হেরেছি। তিন-চারটা ম্যাচেই যদি এ রকম হয়, ভাগ্যকেই তো দুষতে হয়।
বাংলাদেশ দলের কোচ স্টুয়ার্ট লকে কোচ হিসেবে পেয়েছেন আপনারা। দলের এমন ব্যর্থতায় তিনি কী বলেন?
অলক: আর সবার মতো তিনিও হতাশ। তবে কোচ কম চেষ্টা করেননি। প্রতিটি ম্যাচের পরই ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন, নতুন পরামর্শ দিয়েছেন। আমরাই হয়তো সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি।