মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ. মজিনা বলেছেন, ভবিষ্যতে আমি বাংলাদেশকে এশিয়ার টাইগার হিসেবে দেখছি। কেউ কেউ বলে থাকেন বাংলাদেশ গরিব কিন্তু আমি কখনওই তা বলি না। আমি এ দেশের সমৃদ্ধ মাটি, জনশক্তি তথা পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল মানুষ দেখি। এছাড়া এদেশে গ্যাস, কয়লাসহ প্রাকৃতিক সম্পদ দেখি। এসব কিছু মিলেই বাংলাদেশ দ্রুতই মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে। মাগুরায় গতকাল সরকারি কর্মকর্তা, সুধীসমাজের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা এ কথা বলেন। পরে তিনি শহরের শতবর্ষী স্কুল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় ড্যান মজিনা প্রথমে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে সভাপতিত্ব করেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মাসুদ আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন- মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সিরাজুল আকবর। মতবিনিময় সভায় জেলার সর্বস্তরের সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে ড্যান মজিনার কাছে কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন। এছাড়া ড্যান মজিনা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বিগত নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে জানেন। পরে তিনি একই সম্মেলন কক্ষে সুধী সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। যেখানে আওয়ামী লীগ নেতা বাসুদেব কুণ্ডু, বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কিশোর, কৃষক লীগ নেতা মিরুল হাসান, কলেজ শিক্ষক রইছ উদ্দিন তুষার বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কিশোরের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ড্যান মজিনা বলেন, এখানকার গার্মেন্টসগুলোতে রানা প্লাজা, তাজিন ফ্যাশন্স এর মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্যই জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি বাংলাদেশ বস্ত্রখাতে অনেক বেশি পরিবর্তন এনেছে। এখানে শ্রম অধিকারের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বস্ত্রশিল্পগুলোতে ২০১০ সালে কোন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ছিল না। ২০১০ ও ২০১১ সালে ১ টি করে সংগঠন রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে যা ১৫০ টি। পরে ড্যান মজিনা মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন ও ক্লাসে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে পাঠদানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। ড্যান মজিনা তার সফর সম্পর্কে জানান, ২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। এ সময় তিনি তার কাছে ৬৪ জেলা ঘুরে দেখার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এটি তারই অংশ। যেহেতু তিনি নিজেকে শুধু ঢাকার রাষ্ট্রদুত মনে করেন না। সারা দেশেরই রাষ্ট্রদূত তিনি।