দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা আউশ ধান আবাদে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
এ অঞ্চলের ১১টি জেলায় ধানের বীজতলা ও চাষের জন্য জমি তৈরিসহ আউশের চারা আবাদে নিরলহ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কৃষকরা। পাশাপাশি কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের সব ধরনের সম্প্রসারণমূলক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
আঞ্চলিক কৃষি কর্মকর্তারা জানান, চলতি মৌসুমে এখানে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৬শ’ ২২ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ১ হাজার ৬৪ হেক্টর, উফশী ১ লাখ ২০ হাজার ৪শ’ ২২ হেক্টর ও স্থানীয় ১ লাখ ৩৬ হাজার ১শ’ ৩৬ হেক্টর রয়েছে। গতকাল রোববার পর্যন্ত আবাদ সম্পন্ন হয়েছে ৬৯ হাজার ৩শ’ ৬৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রীড ৯০ হেক্টর, উফশী ২৭ হাজার ৫শ’ ৯৩ হেক্টর ও স্থানীয় ৪১ হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আর এবার নির্ধারিত জমি হতে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৮৪২ মে:টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
তারা আরো জানান, দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণত আউশের জাত বিআর-২, ৩, ১২, ১৪, ব্রী-ধান-২৭, ৪২, ৪৩, ৪৮, বাউ-৬৩সহ বিভিন্ন উচ্চফলনশীল জাতের ধান আবাদ করা হয়। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আবাদ চলবে। রোপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমের আবাদ কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন।
কৃষি বিভাগ বরিশাল অঞ্চল অফিস জানায়, চলতি মৌসুমের মোট আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বরিশালে ৩৫ হাজার ৩শ’ ৭৪ হেক্টর, পিরোজপুরে ২১ হাজার ৩৬ হেক্টর, ঝালকাঠীতে ১২ হাজার ৪শ’ ৮১ হেক্টর, পটুয়াখালীতে ৩৯ হাজার ৭শ’ ৬৪ হেক্টর, বরগুনায় ২৯ হাজার ৯শ’ ৭৯ হেক্টর ও ভোলায় ৮৫ হাজার ৭শ’ ১২ হেক্টর জমি রয়েছে।
একইভাবে ফরিদপুরে ৯ হাজার ৬শ’ ১ হেক্টর, মাদারীপুরে ৩৬শ’ ১১ হেক্টর, গোপালগঞ্জে ২৫শ’ ২৮ হেক্টর, রাজবাড়িতে ৫৪শ’ ৬৮ হেক্টর ও শরীয়তপুরে ১২ হাজার ৬৮ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, কৃষকদের সঠিকভাবে আউশ ধান চাষ করা জন্য আধুনিক পদ্ধতির পরামর্শ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া লাইন সুইং পদ্ধতিতে চারা রোপণ, সুষম মাত্রায় সার প্রোয়গসহ সব ধরনের সেবামূলক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
ঝালকাঠীর কৃষক মনির হোসেন, রুস্তম আলী, আজগর শেখ ও নেয়ামত মিয়া জানান, তারা প্রত্যেকেই ৩ বিঘা করে জমিতে আউশ আবাদ করছেন। বর্তমানে বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। তারা জানান, আউশের প্রণোদনা পেয়ে চলতি মৌসুমে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল মুন্নাফ আহমেদ বাসস’কে জানান, চলতি আউশ মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ৪০ হাজার ৯৮৫ জন কৃষককে সরকারিভাবে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রত্যেককে ১০ কেজি করে নেরিকা’র বীজ, ৫ কেজি আউশের বীজ, ইউরিয়া সার ২০ কেজি, পিএসপি ১০ কেজি ও ডিএপি সার ১০ কেজি করে দেয়া হয়েছে।