পাখি সংরক্ষণ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব’
পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, ‘আগামী পহেলা জুলাই থেকে পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটাগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন আইন অনুযায়ী দেশের সকল পৌরসভার ইটভাটা ৩০ জুনের মধ্যে বন্ধ অথবা অন্য জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে। এ সময়সীমা কোনোভাবেই বাড়ানো হবে না। পরিবেশ মন্ত্রণালয় আইন কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর।’
আজ রবিবার সচিবালয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইটভাটা মালিক সমিতির সাথে মত বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর বাস্তবায়ন ও সঠিক প্রয়োগের বিষয়ে ভাটামালিকদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রী উন্নত ও জিগজাগ পদ্ধতির পরিবেশবান্ধব ইটভাটা প্রস্তুতের জন্য ইটভাটামালিকদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন ও রূপান্তরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রদানের জন্য তহবিল গঠন করেছে। সেখান থেকে ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তাগণ পরিবেশবান্ধব ইটভাটা তৈরি করতে পারেন।’
সভায় জানানো হয়—২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়। নতুন আইনের ধারা-১-এর উপধারা-২ অনুয়ায়ী আগামী পহেলা জুলাই থেকে এটি কার্যকর করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত রয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী দেশের সকল পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকার ইটভাটা আগামী ৩০ জুনের মধ্যে বন্ধ অথবা অন্যত্র স্থানান্তর করতে হবে। এ ছাড়া, পুরাতন আইন অনুযায়ী বিদ্যমান ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনি বিশিষ্ট ইটভাটাসমূহকে ৩০ জুন পর্যন্ত দুই লাখ টাকা জরিমানা সাপেক্ষে পরিচালনার যে অনুমতি ছিল, পহেলা জুলাই থেকে নতুন আইন বাস্তবায়নের কারণে সেটি আর কার্যকর থাকছে না। নতুন আইন বাস্তবায়ন ও কার্যকরের কারণে এখন থেকে দেশের প্রতিটি ইটভাটা আধুনিক পদ্ধতিতেই নির্মাণ ও পরিচালনা করতে হবে। এ বিষয়ে সকল জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে খুব শিগগির নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মো. এনামুর রহমান, পরিবেশ সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান, বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবুল ও মহাসচিব মো. আবু বকর।
বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস:
এ দিকে, বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, ‘পাখি প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। একে সংরক্ষণ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের জমি কম, জনসংখ্যা বেশি। দেশের অধিকাংশ মানুষের বাস গ্রাম এবং চরাঞ্চলে। আমরা একদিকে অতিথি পাখিকে যেমন স্বাগত জানাচ্ছি, আবার আমাদের খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা করছি।’
আজ রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বনসংরক্ষক মো. ইউনুছ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী জনাব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু।
সভায় বক্তারা বলেন—পাখি আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিবছর শীতের আগমনের সাথে পৃথিবীর নানা জায়গা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি বাংলাদেশের এসে ভিড় জমায়। আমাদের সবারই উচিত পরিযায়ী পাখির আবাসস্থল নিরাপদ করা।
এর আগে সকালে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস উপলক্ষে একটি র্যালি বের করা হয়।