পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে অনেক সময় বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হয়। বিদেশিরা প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করেন। তারা পরামর্শক পাঠান। আমাদের দেশের সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে তারা পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে বিদেশিদের সাথে আমাদেরকে প্রকল্প সমন্বয় করতে হয়। তিনি বলেন, বিদেশি সাহায্যের একটি অংশ আমরা ব্যবহার করতে পারি না। কারণ এর জন্য যে ম্যাচিং ফান্ড দিতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে তা আমাদের থাকে না। এজন্য আমাদেরকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণে যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
গতকাল শনিবার বারিধারা লেকসাইড পার্কে গুলশান-বনানী-বারিধারা লেককে দূষণের হাত থেকে রক্ষায় আয়োজিত সচেতনতামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ দূষণের কথা উল্লেখ করে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, সারা পৃথিবী এখন পরিবেশ নিয়ে সচেতন। বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী থেকে শুরু করে সবাই এ বিষয়ে সচেতন। সুতরাং পরিবেশকে উন্নত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। ঢাকার আশপাশের নদী বুড়িগঙ্গা এবং তুরাগ দূষণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দূষণের উত্স ট্যানারি শিল্প এখনো হাজারীবাগ থেকে সরেনি। এসব কারখানা না সরলে বুড়িগঙ্গার দূষণ কোনদিন বন্ধ হবে না। আর এসব কলকারখানার বর্জ্য নদী, খাল-বিলে ফেলা বন্ধ করা না গেলে বুড়িগঙ্গা, তুরাগসহ অন্যান্য নদীর দূষণ বন্ধ করা যাবে না। এজন্যই কলকারখানায় বর্জ্য শোধনাগার যন্ত্র ইটিপি স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গুলশান, বনানী এবং বারিধারা লেকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বন মন্ত্রী বলেন, এসব এলাকায় ওয়াসার লাইন বহু আগে থেকে ছিলো। ধানমন্ডিতেও বিভিন্ন সেবা সংস্থার লাইন ছিলো; কিন্তু এসব লাইন যখন স্থাপন করা হয়েছে তখনকার জনসংখ্যা থেকে এখনকার জনসংখ্যা একশ গুণ বেশি। এ কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু সবকিছু যে রাতারাতি ঠিক হয়ে যাবে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। তবে পরিবেশ রক্ষায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
পরিবেশ ও বন উপ-মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক নিয়ে অনেক আশার কথা শুনেছি। এবার সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। সবার জন্য নিরাপদ সুষ্ঠু জীবন নিশ্চিত করতে হলে এর বিকল্প নেই।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব সফিকুর রহমান পাটোয়ারি বলেন, শুধু বক্তব্য দিয়ে কাজ হবে না। রাজউক, সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাসহ অন্যান্য সংস্থার সাথে মিলিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রইসুল আলম মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রহমত উল্লাহ এমপি, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মূয়ীদ চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গুলশান-বারিধারা-বনানী লেক প্রকল্প দূষণমুক্ত করার কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এর আগে গুলশান দুই নম্বর গোলচক্কর থেকে একটি সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা বের করা হয়।