চলতি সপ্তাহে আরো ১৭ মামলার চার্জশিট অনুমোদন করবে দুদক

চলতি সপ্তাহে আরো ১৭ মামলার চার্জশিট অনুমোদন করবে দুদক

image_81012_0সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় চলতি সপ্তাহে পাঁচ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতের দাখিলের জন্য অনুমোদন করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়েছে সেগুলো হলো-ডিএন স্পোর্টস লিমিটেড, টি অ্যান্ড ব্রাদার্স, প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেড, নকশি নিট কম্পোজিট লিমিটেড ও খান জাহান আলী সোয়েটার লিমিটেড।

জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া এলসি ও জালিয়াতির মাধ্যমে অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ বরাদ্দ দেখিয়ে ‘ফান্ডেড’ অংশের ৩৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ৩১৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানের শনাক্তকারী হয়েছেন তিন হাজার কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎকারী হলমার্কের এমডি তানভীর ও জিএম তুষার।

১৭ মামলার প্রতিবেদনে সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হুমায়ুন কবিরসহ ব্যাংকের ১৬ কর্মকর্তা, ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের ১৬ জন কর্ণধার এবং হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদ ও জিএম তুষার আহমেদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাকি অভিযুক্তরা হলেন টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের চেয়ারম্যান জিনাত ফাতেমা, এমডি তাওহীদ হাসান, পরিচালক তসলিম হাসান, প্যারাগন নিট কম্পোজিটের এমডি সাইফুল হাসান রাজা, পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও তাদের সহযোগী মকুল হোসেন, নকশি নিটের চেয়ারম্যান আমেনা বেগম, এমডি মো. আবদুল মালেক ও তাদের সহযোগী জামির হোসেন, খান জাহান সোয়েটারের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম মোল্লা, এমডি আবদুল জলিল শেখ, পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও মীর মো. শওকত আলী, ডিএন স্পোর্টসের চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন চৌধুরী, এমডি শফিকুর রহমান জন ও তার স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার শিখা।

সাবেক এমডি ছাড়াও সোনালী ব্যাংকের বাকি যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ডিএমডি মাঈনুল হক (ওএসডি), আতিকুর রহমান (ওএসডি), জিএম আ ন ম মাশরুরুল হুদা সিরাজী, ডিজিএম শেখ আলতাফ হোসেন, মো. সফিজ উদ্দিন আহমেদ, কানিজ ফাতেমা চৌধুরী, এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান (সাময়িক বরখাস্ত), খুরশীদ আলম, জিএম অফিসের জিএম ননী গোপাল নাথ (ওএসডি), মীর মহিদুর রহমান, সাবেক জিএম সবিতা সিরাজ, এজিএম আশরাফ আলী পাটোয়ারী, রূপসী বাংলা শাখার (সাবেক হোটেল শেরাটন) সাবেক ব্যবস্থাপক (পরে ডিজিএম) এ কে এম আজিজুর রহমান (হলমার্কের মামলায় কারাগারে), এজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) মো. সাইফুল হাসান ও নির্বাহী কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মোহাম্মদ আবদুল মতিন।

এর আগে গত মঙ্গলবার ২৭ মামলার মধ্যে তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০টি মামলার প্রতিবেদন দাখিলের অনুমোদন দেয় দুদক কমিশন।

অভিযোগপত্র অনুমোদন করা প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো- প্যারাগন নিট কম্পোজিট, ডিএনস্পোর্ট ও খান জাহান আলী সোয়েটার।

দুদক সূত্র জানায়, অভিযোগপত্রে ওই তিন প্রতিষ্ঠান ও সোনালী ব্যাংকের ২১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন: প্যারাগন নিট কম্পোজিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুল হাসান রাজা, পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও তাদের সহযোগী মুকুল হোসেন। ডিএন স্পোর্টসের  চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)  শফিকুর রহমান, অফিসার ফাহমিদা আক্তার শিখা। খান জাহান আলী সোয়েটারের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)  শেখ আ. জলিল, পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও পরিচালক মীর মো. শওকত আলী।

এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা হলেন: ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ডিএমডি মাঈনুল হক (ওএসডি), ডিজিএম শেখ আলতাফ হোসেন, মো. সফিজ উদ্দিন আহমেদ, এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান (সাময়িক বরখাস্ত), খুরশীদ আলম ও এজাজ আহমেদ; জিএম অফিসের জিএম ননী গোপাল নাথ (ওএসডি) ও মীর মহিদুর রহমান;  রূপসী বাংলা শাখার (সাবেক হোটেল শেরাটন) সাবেক ব্যবস্থাপক (পরে ডিজিএম) এ কে এম আজিজুর রহমান (হলমার্কের মামলায় কারাগারে), এজিএম (সাময়িক বরখাস্ত) মো. সাইফুল হাসান ও নির্বাহী কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মো. আবদুল মতিন।

এদিকে ২৭ মামলার দুদকের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী, উপপরিচালক এস এম এম আখতারসহ মোট আটজন বাদী।

দুদক সূত্রমতে, গত বছরের  ১ জানুয়ারি রাজধানীর রমনা থানায় পাঁচ  প্রতিষ্ঠানের ১৫  কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যাংকর ২০ কর্মকর্তাসহ মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২৬টি  মামলা করেন দুদকের আট কর্মকর্তা।  এর আগে  ২০১২ সালে  ২৭ ডিসেম্বর  কমিশনের বৈঠকে এই ২৬ মামলা দায়েরের অনুমোদন দেয়া হয়। পরে আরো একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন হয়।

বাংলাদেশ