পেট কমাতে ১০ পরামর্শ

পেট কমাতে ১০ পরামর্শ

fat.reduceমেদবহুল পেট, পেট ফাঁপা নানা স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। যারা একটু স্থূলকায়, তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিটাও বাড়তে থাকে সমানুপাতিক হারে। আপনার মনে হতে পারে, পরিশ্রম তো কম করছি না, তারপরও পেট নিজের ইচ্ছেমতোই বাড়ছে। আসলে আপনার পেট আপনারই নিয়ন্ত্রণে। আপনার শুধু প্রয়োজন একটি সুষম খাদ্য-তালিকা তৈরি করা এবং সেটা সুশৃঙ্খলভাবে অনুসরণ করা। হাঁটা, সাইক্লিং ও নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে ও পটাসিয়ামসমৃদ্ধ আঁশ জাতীয় খাবার আপনাকে দিতে পারে মেদহীন পেট। নিচে পেট কমাতে যা খাবেন ও যা খাবেন না, সে সম্পর্কে কয়েকটি পরামর্শ দেয়া হলো:

লবণের পরিমাণ কমিয়ে দিন: খাবারে লবণের পরিমাণ যথাসম্ভব কমিয়ে দিন। তবে প্রয়োজনীয় আয়োডিনটাও শরীরকে দিতে হবে। তাই লবণ খাওয়াটা একটি পরিমিত মাত্রায় নিয়ে আসুন। কাঁচা লবণ খাবেন না। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ রান্না করা খাবারের মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণ খেতে পারেন।
ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড বাদ দিন: কখনোই ফাস্ট ফুড বা জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার খাবেন না। কারণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার আপনার শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করবে। আপনার শরীরটাকে স্থূলকায় করতেও ভূমিকা রাখে ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড। তাছাড়া নানাবিধ ও ভয়াবহ সব স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণও প্রক্রিয়াজাত এসব খাবার।
তেলে ভাজা খাবার পরিহার করুন: বাইরের তেলে ভাজা খাবার তো নয়ই, বাড়িতেও যথাসম্ভব তেলে ভাজা খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। রমজান মাসে খাবার তালিকায় ১ বা ২ দিন তেলে ভাজা খাবার রাখতে পারেন।
কোমল পানীয় রাখুন বাদের তালিকায়: যে কোন কোমল পানীয় আপনার স্বাস্থ্যের ওপর নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। হাড়ের ক্যালসিয়াম, দাঁতের এনামেল ক্ষয় থেকে শুরু করে ক্যান্সারের কোষ পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে কোমল পানীয়। আর একই সঙ্গে আপনার মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণও কোমল পানীয়। তাই কোমল পানীয় চিরতরে পরিত্যাগ করুন। এর পরিবর্তে পান করুন বাড়ির ফিল্টারের সুপেয় পানি, ডাবের পানি ও ফলের জ্যুস।
আঁশসমৃদ্ধ খাবার বেশি খান: দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনি পেট ফাঁপার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। তাই প্রথমেই জেনে নিন কোন খাবারগুলোতে বেশি আঁশ থাকে।
পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান: সোডিয়াম যেমন শরীরের পানিকে ধরে রাখে, পটাসিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে কলা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি। অবশ্য, একই সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। কারণ, মিষ্টি আলু জাতীয় খাবারে মুটিয়ে যাওয়ার কিছুটা ঝুঁকিও রয়েছে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: নিজেকে সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পানি পানের কোন বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত পানি না করলে শরীরে সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়।
সাধারণ খাবার খান: যেসব খাবারে চর্বি বা চিনির পরিমাণ বেশি, সেসব খাবার খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকটা লক্ষ রাখুন। প্রয়োজনে কিছু খাবার এড়িয়ে চলুন। সহজে হজম হয়, এ ধরনের সাধারণ খাবার খাওয়ার ওপর বেশি গুরুত্ব দিন।
কৃত্রিম মিষ্টি খাবেন না: খাবারকে বেশি মিষ্টি করার জন্য বাজার থেকে কেনা কৃত্রিম সুইটেনার ব্যবহার করবেন না। এতে শরীরে নানা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
বাড়িতে তৈরি খাবার খান: অনেক সময় বাধ্য হয়ে কেউ কেউ হোটেলে হয়তো দুপুর বা রাতের খাবারটা সেরে নেন। একটু কষ্ট করে হলেও, বাড়ি থেকে অফিস বা কর্মস্থলে খাবার নিয়ে যাওয়াটাই সমীচীন। কারণ, হোটেলের বাবুর্চি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়ির গৃহিণী বা মায়ের মতো স্বাস্থ্য-সচেতন হবেন না। তাই এক্ষেত্রে নিজে সচেতন হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্য আপনার নিয়ন্ত্রণে, আপনি স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রণে নন।

অন্যান্য বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিনোদন