বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেনেন্ট জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ”সরকারের কতিপয় লোক টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে তাদের বিচার করতে হবে। কারণ প্রশ্নপত্র ফাঁস নারায়াণগঞ্জের ৭ হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ।”
তিনি আরো বলেন, “একটা জাতির সবচেয়ে বড় সম্পদ সে দেশের শিশুরা। তাদের সঠিকভাবে মানুষ করার দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষকদের। কিন্তু এই শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি দুর্নীতি প্রবেশ করে তাহলে জাতি কুশিক্ষার দিকে ধাবিত হবে।”
শুক্রবার বেলা ১২ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস, বিপন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, “নতুন প্রজন্ম একটি দেশের ভবিষৎ। তাদের চরিত্র গঠন, সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করার দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষকদের। কারণ প্রাথমিক স্কুল একটি শিশুর জীবনের দীর্ঘ পথ পরিক্রমার শুরু।”
সংসদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বর্তমান জাতীয় সংসদের কোনো অস্তিত্ব নেই। এই সংসদ চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সংসদের প্রতিনিধিরা জনগণের ভোটে আসেননি। ফলে যেকোনো সময় এই সংসদ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।”
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সম্পর্কে বিএনপি এ নেতা বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ চরম আতঙ্কে আছে। একজন ব্যক্তি জানেন না, ঘর থেকে বের হয়ে তিনি আর ঘরে ফিরতে পারবেন কি না। তাই দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে হবে। আর বসে থাকা যাবে না।”
আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক সমিতি। এ সময় তারা ১২ দফা দাবি উল্লেখ করে। ১২ দফা দাবিসমূহ হলোঃ
বর্তমান অবস্থানের ওপর ভাড়া বাড়িতে স্কুল নিবন্ধনের অনুমতি দিতে হবে, ট্রেজারি একশত টাকা করতে হবে, রিজার্ভ ফান্ডে স্থায়ী আমানত বাতিল আওতায় আনতে হবে, শিক্ষক ও কর্মচারি নিয়োগের পূর্বে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ অন্যান্য বিয়স উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি কপি সংযুক্ত এবং অত্র উপধারাটি শিথিল করতে হবে।
বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি মানসম্মত সহায়ক বই পাঠের অনুমতি প্রদান, শিক্ষাখাতে বাজেটে কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহের জন্য আলাদ বরাদ্দ, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের জন্য আলাদা শিক্ষা বোর্ড গঠন করতে হবে এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুলসমূহের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বাণিজ্যিক বিল বন্ধ করতে হবে।
এছাড়াও কিন্ডারগার্টেন এক হাজার ৫০ বর্গফুট বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য ভবন অনুমতি প্রদান করতে হবে, প্রাথমিক স্তরে ছয়জন শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে সরকারি সম্মানি ভাতা প্রদান করতে হবে, সরকারি উদ্যোগে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার মতে সরাসরি নিজ স্কুলের নামে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার অনুমতি দিতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা আকবর হোসেন ভূইয়া নান্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ মিজানুর রহমান, মহাসচিব এম এ তুহিন।