কাজটা এখন অনেকটা হাতে এক উইকেট নিয়ে ওভার প্রতি ১২ রান তোলার মতো চ্যালেঞ্জিং- উইকেট হারানো চলবে না, রান তুলতে হবে ঝড়ের গতিতে!
আকরাম খানদের এখন দ্রুততম সময়ে বিদেশী একজন কোচ খুঁজে পেতে হবে; কিন্তু সেই কোচকে যোগ্য হতে হবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তি করতে রাজি হতে হবে। এমন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কোচ খোঁজার জন্যই পাঁচ সদস্যের এই কমিটি গঠন করেছে বিসিবি। কমিটিতে বিসিবির সিনিয়র ও অভিজ্ঞ পরিচালকরা যেমন আছেন, আছেন তিন সাবেক অধিনায়কও।
কমিটির পাঁচ সদস্য হলেন- জালাল ইউনুস, মাহবুব আনাম, আকরাম খান, নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং খালেদ মাহমুদ সুজন। এই কমিটি মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করলেও ব্যক্তিগত ও দলীয় পর্যায়ে তারা বিদেশী কোচ খুঁজছেন কয়েক দিন ধরেই।
আকরাম খান ও খালেদ মাহমুদ সুজন আগে থেকেই কাজ শুরু করার এই অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন, তারা আশাবাদী যে, ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগেই তারা কোচ খুঁজে পাবেন। আর সেটা না পেলে স্থানীয় কাউকেই এই সিরিজটায় দায়িত্ব সামলাতে বলা হবে।
বলাই বাহুল্য, দ্রুত কোচ খুঁজে বের করার এই চ্যালেঞ্জটা তৈরি হয়েছে জাতীয় দলের সর্বশেষ কোচ শেন জার্গেনসেন হঠাৎই পদত্যাগ করায় এবং অনেক টানপোড়েনের পর বিসিবি আগেরদিন তার পদত্যাগপত্র কার্যকরভাবে গ্রহণ করে ফেলায়।
২০১১ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের সাবেক বোলিং কোচ জার্গেনসেন বাংলাদেশে এসেছিলেন বোলিং কোচ হিসেবে। প্রথমে স্টুয়ার্ট ল, পরে রিচার্ড পাইবাসের দলে ছিলেন তিনি।
কিন্তু পাইবাস হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দেয়ায় ২০১২ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজে কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। সেই দায়িত্ব পেয়ে এতোটা চমকে দেন জার্গুনসেন, যে বিসিবি তাকেই রেখে দেয়।
শুরুতে সফল হলেও সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও এ বছরের গোড়ার দিকে আরও কিছু ব্যর্থতায় চলে যেতে হলো জার্গেনসেনকে। এবার তার বদলি খোঁজার পালা।
আকরাম বললেন, সেটা তারা দ্রুত খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী, ‘আমরা খুব দ্রুতই নিজেদের যার যার অগ্রগতি নিয়ে বসবো। ইতিমধ্যে আমরা ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য কোচের সঙ্গে আলাপ করেছি। তাদেরই কারো সঙ্গে দ্রুত চুক্তি করে ফেলার ব্যাপারে আশাবাদী আমরা।’
খালেদ মাহমুদ বললেন, তারা দ্রুত একটা শর্ট লিস্টও করে ফেলার ব্যাপারে আশাবাদী, ‘আমরা অনেকের সঙ্গেই কথা বলছি। যারা বাংলাদেশে দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করতে আগ্রহী এমন কোচদের একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা আমরা দ্রুত করে ফেলতে পারবে।’
যদিও আকরাম বা সুজন কেউ এসব আলোচনা চলতে থাকা কোচদের নাম বলতে চাইলেন না।
কারণ, সে ক্ষেত্রে আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং যে যেখানে আছেন, কিছু ঝামেলায় পড়তে পারেন। তবে ইতিমধ্যে বাতাসে কিছু নাম ভাসতে শুরু করেছে। সাবেক জিম্বাবুয়ের তারকা ও ইংল্যান্ডের কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, পাকিস্তানি বোলিং তারকা আকিব জাভেদ, অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্য ফিনিশার’ মাইকেল বেভান, শ্রীলঙ্কান টেস্ট তারকা ও নিউসাউথ ওয়েলস ও শ্রীলঙ্কা-এ দলের সাবেক কোচ চান্দ্রিকা হাতুরা সিংহে আছেন এই আলোচনায়।
পুরো আলোচনায় কোনো দেশী কোচ না থাকাটা একটু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে আকরাম আগের দিন সভাপতির বলা কথাই আবার শোনালেন- ২০১৫ বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জ নিতে স্থানীয় কোনো কোচ তৈরি বলে তাদের মনে হয়নি।
তবে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে আবার সাময়িক স্থানীয় কোচ দেখা যেতে পারে। যথারীতি দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে টেস্টে প্রথম টেস্ট কোচ এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় সারওয়ার ইমরান।
সে ইঙ্গিত আকরামই দিলেন, ‘বাংলাদেশ দল তো অভিষেক টেস্টই ইমরান ভাইয়ের অধীনে খেলেছে।