বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান গত পাঁচ বছরে এক দিনও ছুটি কাটাননি। পুরো সময়টা তিনি দেশের ব্যাংকিং খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন প্রয়াসে ব্যয় করেছেন। বিশিষ্ট এই উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ করেছেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতে কারো কারো সংশয় থাকলেও তিনি সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে টেকসই খাত হিসেবে ব্রান্ডিং করতে পেরেছেন। বৈশ্বিক মন্দা এবং রাজনৈতিক-সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন চাকা থমকে দাঁড়ায়নি। গভর্নর হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদ পূরণের প্রাক্কালে গত শুক্রবার ড. আতিউর রহমান একটি বার্তা সংস্থাকে সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গভর্নরের দায়িত্ব আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। এ কারণে আমি একদিনের জন্যও ছুটি ভোগ করিনি।
নূরুল ইসলামের পর ড. আতিউর হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে পাঁচ বছর পূর্ণ করলেন। অন্য আট গভর্নরের কেউ পাঁচ বছর পূরণ করতে পারেননি। স্বাধীন বাংলাদেশে দশ জন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে ২০০৯ সালের ৩ মে দশম গভর্নর হিসেবে ড. আতিউর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নতুন রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির আলোকে জাতিকে পুনর্নির্মাণ এবং বৈশ্বিক মন্দা থেকে দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখা এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি কাজ করেন।
আতিউর রহমান বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরো সামাজিক ও মানবিক করে তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
গভর্নর বলেন, তার মেয়াদের সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন উপযোগী রাজস্ব নীতি দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছেন। তার দাবি, এ সময়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থায় পৌঁছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, প্রবাস আয়, রফতানি প্রবৃদ্ধি, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্তের সঙ্গে সঙ্গে আমদানি ব্যয় স্থিতিশীল রয়েছে।
দশ টাকায় কৃষক, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক প্রান্তিক মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতায় যুক্ত হয়েছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হচ্ছে। সূত্র: বাসস।