ডেসটিনি গ্রুপের বিরুদ্ধে করা দুই মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার দুপুর দেড়টার দিকে দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরকার ও সহ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম এই চার্জশিট দাখিল করেছেন বলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা নতুন বার্তা ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত ৫১ জনের নাম চার্জশিটে বহাল থাকছে। চার্জশিটে নতুন করে আর কোCBF নাম সংযোজন বিয়োজন হচ্ছে না।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ডেসটিনির চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৫১ জনের বিরুদ্ধে চার হাজার ১১৯ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১২ সালের ৩১ জুলাই মামলা করে দুদক।
মামলা করার ১৮ মাসের মাথায় গত ১৬ জানুয়ারি অভিযোগপত্র অনুমোদন করে দুদক। মামলার এজাহার ও প্রমাণাদিসহ মোট নথি ৮১৮ পৃষ্ঠার এর মধ্যে মূল চার্জশিট ২৩৩ পৃষ্ঠার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ লিঃ এর বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়েছে ৪৬ জনকে। ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন লিঃ এর বিরুদ্ধে করা মামলার আসামি ১৯ জন। দুই মামলায় অভিন্ন আসামি রয়েছেন ১৪ জন। ডেসটিনি মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ লিঃ এর বিরুদ্ধে করা মামলায় এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনের মামলায় পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে ২১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ১৫০ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিঃ কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় চার হাজার ১১৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে তাদের দুটি অ্যাকাউন্টে ৫৬ লাখ ও চার কোটি ৮৭ লাখ টাকা আছে। বাকি তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা তারা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। মামলার তদন্ত চলে ১৮ মাস ধরে।
তদন্তপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মো. রফিকুল আমীনসহ সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়া হয়। একজন উপ-পরিচালক ও একজন সহকারী পরিচালক মামলা দুটি তদন্ত করেন। তাদের সহায়তা করেন পাঁচ সদস্যের একটি টিম।
বর্তমান পর্যায়ে মামলা দুটির চার্জশিট অনুমোদিত হওয়ার পর থানা থেকে চার্জশিট নম্বর নেয়া হয়েছে। এখন বিচার উপযোগী করে মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিলের জন্য রাত-দিন কাজ করছেন দুই মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, প্রথম মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন সাবেক সেনাপ্রধান ও ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট লে. জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ ও ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গোফরানুল হক, পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, ফারাহ দীবা, সাঈদ-উর-রহমান, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, জমশেদ আরা চৌধুরী, ইরফান আহমেদ, শেখ তৈয়বুর রহমান, নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসেন, জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া, এস এম আহসানুল কবির, জুবায়ের হোসেন, মোসাদ্দেক আলী খান, আব্দুল মান্নান ও আবুল কালাম আজাদ।
দ্বিতীয় মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, আজাদ রহমান, মো. আকবর হোসেন সুমন, সাঈদুল ইসলাম খান (রুবেল), মো. সুমন আলী খান, শিরীন আকতার, রফিকুল ইসলাম সরকার, মো. মজিবুর রহমান, লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম, ড. এম. হায়দারুজ্জামান, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, কাজী মো. ফজলুল করিম, মোল্লা আল আমীন, মো. শফিউল ইসলাম, মো. জিয়াউল হক মোল্লা, সিকদার কবিরুল ইসলাম, মো. ফিরোজ আলম, ওমর ফারুক, সুনীল বরণ কর্মকার ওরফে এস বি কর্মকার, ফরিদ আকতার, এস সহিদুজ্জামান চয়ন, আবদুর রহমান তপন, মেজর (অব.) সাকিবুজ্জামান খান, এস এম আহসানুল কবির (বিপ্লব), এ এইচ এম আতাউর রহমান রেজা, গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, মো. আতিকুর রহমান, খন্দকার বেনজীর আহমেদ, এ কে এম সফিউল্লাহ, শাহ আলম, মো. দেলোয়ার হোসেন, মিসেস জেসমিন আক্তার (মিলন) ও মো. শফিকুল হক।
এর আগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ডেসটিনি গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন ও ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে প্রায় চার হাজার ১১৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমানে তাদের দুটি অ্যাকাউন্টে ৫৬ লাখ ও চার কোটি ৮৭ লাখ টাকা আছে। বাকি তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা তারা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।