সেবার মানসিকতা নিয়ে রোগীদের সেবা করতে ডাক্তারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “শুধু ওষুধ নয়, অনেক সময় ডাক্তারদের হাতের ছোঁয়া, মুখের একটি কথাতেই রোগীর রোগ ভালো হয়ে যায়। আমরা চাই আপনারা সেভাবে মানুষের সেবা করবেন।”
রোববার সকালে বঙ্গুবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ান অ্যান্ড সার্জন’র ১২তম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ডাক্তারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা যে শপথ নিয়েছেন কর্মক্ষেত্রে তা স্মরণ করে জনগণের সেবা করবেন, সেটাই আমরা চাই। মানুষ যখন চিকিৎসকের কাছে যান তখন তারা যেনো চিকিৎসাও পান, মনে শান্তিও পান।”
তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে আর্ত, পীড়িত ও দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন। দেশ ও জাতির সেবায় এবং মানবতার কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করবেন।”
সরকার স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য সংবিধান স্বীকৃত জনগণের স্বাস্থ্য সেবা তাদের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়া। গত পাঁচ বছরে স্বাস্থ্য খাতের আমুল পরিবর্তন করেছি। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছি।”
বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকার ঢাকার কুর্মিটোলা ও খিলগাঁ এ জেনারেল হাসপাতাল, শ্যামলীতে টিবি হাসপাতাল, ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, আগারগাঁও এ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, ঢাকা মেডিকেল কলেজ-২, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালসহ বিভিন্ন জেলায় ২৪ হাসপাতাল নির্মাণের পাশাপাশি ১৫ হাজার ৬০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।”
মেডিকেল শিক্ষা বিস্তারে সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সরকার যুগোপযোগী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রসারে সরকারি ছয়টিসহ ২০টি নতুন মেডিকেল কলেজ, ১১টি ডেন্টাল কলেজ, ৪৭টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, ৭২টি মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল, ১০টি নাসিং কলেজ এবং ৩১টি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী কলেজটির উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৯২৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সনদ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে দেশী-বিদেশী ১৬ জন বিশেষজ্ঞকে ফেলোশিপ দেয়া হয়েছে। মেডিসিন ও সার্জারি বিষয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে ফেলোশিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য ছয়জনেকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ অ্যান্ড সার্জনস্ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি এ কলেজ থেকে ৪ হাজার ১৭৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফেলোশিপ (এফসিপিএস) অর্জন করেছেন এবং দুই হাজার ২৯৫ জন চিকিৎসক মেম্বারশিপ (এমসিপিএস) লাভ করেছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কলেজটির সভাপতি এস এ এম গোলাম কিবরিয়া, সহ সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা ও কলেজটির প্রাক্তন সভাপতি মাহমুদ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।