৭ গুম ও খুনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা আছে: শামীম ওসমান

৭ গুম ও খুনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা আছে: শামীম ওসমান

shamim osman4নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতা শামীম ওসমান এমপি।

শনিবার ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন চ্যানেলটির বিশেষ প্রতিবেদক সুলতানা রহমান পুতুল।

“নজরুলসহ সাতজনের অপহরণ ও খুনের ঘটনায় কাউন্সিলর নূর হোসেনের নাম উঠে এসেছে, তিনিও আপনার শিষ্য”- প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, “ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে আমি কিন্তু এ রকম গ্রুপ দেখি না। দুটি গাড়ি একই সময় হাইজাক হলো, তাহলে তারা কারা? র‌্যাব হোক, ডিবি হোক, পুলিশ হোক কিংবা যে-ই হোক না কেন, যদি কারো ইনভলভমেন্ট থেকে থাকে, তাহলে তাদের উচ্চ লেভেলে এটা জানত।”

“আপনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দিকে ইঙ্গিত করছেন”- এমন প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, “সর্ষের ভেতর ভূত আছে। কারণ এদের সহযোগিতা ছাড়া… কিছু না কিছু সহযোগিতা আছে।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, “ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) সব জানিয়েছি।”

গত ২৭ এপ্রিল রোববার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন কাছাকাছি সময়ে আদালত থেকে বাড়ি ফেরার পথে আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালককে অপহরণ করা হয়।

নজরুল ছিলেন  নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তার সঙ্গে অপহৃত অন্যরা হলেন গাড়িচালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগকর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন ও লিটন।

ওই দিন বেলা আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা শেষে সাদা রঙের এক্স করোলা গাড়িতে সিদ্ধিরগঞ্জ ফিরে যাচ্ছিলেন নজরুল ও তার সহযোগীরা। পথে শিবুমার্কেট এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে তাদের অপহরণ করা হয়।

অপহৃত নজরুলের গাড়িটি ওই রাতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে শালবনের পাশে।  আর চন্দন সরকারের গাড়িটি  ঢাকার নিকেতন থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

অপহরণের দুই দিন পর বুধবার বিকেলে ছয়জনের ও বৃহস্পতিবার সকালে একজনের মৃতদেহ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীতে।

সাতজনের অপহরণ ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‌্যাবের কমান্ডিং অফিসার এবং ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করে সরকার।
 
নজরুল ইসলাম অপহৃত হওয়ার পর ওই দিনই তার স্ত্রী থানায় যে মামলা করেন, তাতে প্রধান আসামি করা হয় নারায়ণগঞ্জ সিটির ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. ইয়াসিনকে।

বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ জনতা নূর হোসেনের ব্যবসায়িক কার্যা লয়ে ও শুক্রবার হাজি ইয়াসিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেয়।

এদিকে শনিবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি মাইক্রোবাস জব্দ ও তিনজনকে আটক করে। মাইক্রোবাসে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে বলে জানায় পুলিশ।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর