চলতি বছরেই মোবাইল ফোনের নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
এটা চালু হলে নির্দিষ্ট একটি অপারেটরের একজন গ্রাহক অন্য অপারেটরের সংযোগ ব্যবহার করলেও তার নম্বর অপরিবর্তিত থাকবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ জানান, এ সংক্রান্ত একটি উদ্যোগ গাইডলাইন তৈরি পর্যায় কাজ চলছে। গাইডলাইন তৈরি শেষে এ বছরের মধ্যেই এটি চালু করা যাবে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, এ পদ্ধতি চালুর জন্য মোবাইল লাইসেন্সে (টুজি) নবায়ন গাইডলাইনে ইতোমধ্যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়নে চার সদস্যরে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ কাজ এখন শেষের পর্যায়ে।
জিয়া আহমেদ বলেন, কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। এগুলোর সমাধান করা হলে এটি চালু করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না।
বিটিআরসি গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রাহকের ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রাখার নীতিমালা প্রণয়ন কাজ শুরু করেছিল ২০০৮ সালে।
মাঝখানে কাজটি প্রায় থমকে গিয়েছিল। সম্প্রতি নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু করতে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে বিটিআরসি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু হলে বাজারে প্রতিযোগিতা যেমন বাড়বে সেই সঙ্গে বাড়বে সেবার মান। গ্রাহক কোনও অপারেটরের সেবায় অসন্তুষ্ট হলে সে সংযোগ পরিবর্তন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে তার ফোন নম্বর অপরিবর্তিত থাকবে।
উন্নত বিশ্বে অনেক আগেই চালু হয়েছে নম্বর পোর্টেবিলিটি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি সেদেশে নম্বর পোর্টেবিলিটি উদ্বোধন করেন। শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জাপানে এটি চালু হয় ২০০৩ সালে।
এ অঞ্চলে একমাত্র ব্যতিক্রম পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। পাকিস্তান নিরাপত্তা হুমকি মনে করে সম্প্রতি নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু বন্ধ করে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এটি চালু করে ২০০১ সালে, জার্মানি ২০০২ সালে, ব্রাজিল ২০০৯ সালে।
এমনকি আফ্রিকা মহাদেশের কেনিয়ার মতো দেশেও চলতি বছরের ১ এপ্রিলে চালু হয়েছে নম্বর পোর্টেবিলিটি।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেন (এআইডাব্লিউ) এর শিক্ষক ড. ফাহিম হোসাইন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেক আগেই নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু করা উচিত ছিল। তারপরেও বিটিআরসির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। গ্রাহকদের সুবিধা নিশ্চিত করতে এটি চালু করা খুবই জরুরি।
বর্তমানে অনেক গ্রাহক তার অপারেটরের অসন্তুষ্ট হলেও নম্বর পরিবর্তন হবে বলে অন্য অপারেটরের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারছেন না। নম্বর পোর্টেবিলিটি চালু গ্রাহকেরা খুব সহজেই অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবেন।