মিসরের একটি আদালত সোমবার মুসলিম ব্রাদারহুডের ৬৮৩ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। এদের মধ্যে দলটির আধ্যাত্মিক নেতা মোহাম্মদ বদিও রয়েছেন। সাইয়েদ ইউসুফ নামের যে বিচারক আজ রায়টি দিয়েছেন, তিনিই ২৪ মার্চ এক রায়ে ৫২৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিচারকাজ শেষ হয়ে যায় বলে এক আইনজীবী জানিয়েছেন। এই মামলাটি মিসরের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ‘হত্যা’ করেছে বলে জানিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক গবেষক।
রায় প্রকাশের পর আদালতের বাইরে অবস্থানরত অভিযুক্তদের স্বজনেরা চিৎকার করতে থাকেন, বেশ কয়েকজন নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
মামলা পর্যবেক্ষণকারী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক মোহাম্মদ আলমেসিরি বলেন, এতে মৌলিক ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই মামলাটি মিসরের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ‘হত্যা’ করেছে।
বিচার চলাকালে আসামিপক্ষের বেশ কয়েকজন আইনজীবী বিচারকের অপসারণের দাবি করেন। তারা বিচারককে ‘কসাই’ হিসেবে অভিহিত করেন।
২৫ আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী মোহাম্মদ আবদেল ওয়াহেব বলেন, আদালতে মাত্র পাঁচ মিনিটের শুনানির পরই রায় ঘোষণা করা হয়। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, বিচারক আসামিপক্ষের কোনো যুক্তি শুনতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
আদালতের বাইরে অপেক্ষমাণ আবদেল নাসের হোসাইন বলেন, তার ভাইসহ পাঁচ স্বজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এই স্বজনদের মধ্যে মাত্র একজন মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
সাইয়েদ ইউসুফ নামের এই বিচারকই ২৪ মার্চ এক রায়ে ৫২৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ওই সময়ে ব্যাপক অনিয়মের জন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো তার তীব্র সমালোচনা করেছিল।
আজ যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বদি রয়েছেন। রায়ের সময় ৬৮৩ জনের মধ্যে মাত্র ৭০ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
গত বছরের ১৪ আগস্ট কায়রোতে দুটি সমাবেশ থেকে জনতাকে সরিয়ে দিতে চেষ্টার সময় যে সংঘর্ষ হয়েছিল, তার দায়ে এই ফাঁসির রায় দেয়া হলো। ওই সময়ের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুৎ করার প্রতিবাদের জনতা বিক্ষোভ করছিল।