বাংলাদেশ ও আমেরিকার বাণিজ্য ফোরাম- টিকফার- প্রথম সভা হতে যাচ্ছে আজ।
এ উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল এখন ঢাকায় রয়েছে। রোববার বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সাথে একটি বৈঠক করেছেন।
কী হবে আগামিকালের বৈঠকের বিষয় আর বাংলাদেশ এ থেকে কতটুকু লাভবান হতে পারে?
প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে জোরালো দাবি জানানো হবে বলে জানা গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের অন্তত আট ধরনের পণ্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়ে আসছিল। এর মধ্যে সিরামিক পণ্য অন্যতম।
সিরামিক কারখানা মালিকদের সংঘঠন বাংলাদেশ সিরামিক ওয়ার ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল রিজভি-উল কবির বলছিলেন, “এই সুবিধা স্থগিত করার কারণে, এখন আমাদের পণ্য ২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকছে। এটা আমাদের জন্য একেবারেই অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে, নতুন করে কোনো ক্রেতা আসছে না, পুরনোরাও আগ্রহ হাড়িয়ে ফেলছে”।
শ্রমিকের স্বার্থ সুরক্ষা ও কর্ম পরিবেশে নিরাপত্তাজনিত শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কারণে, ২০০৭ সালে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের দাবি জানায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী একটি শ্রমিক সংগঠন।
গতবছরে বাংলাদেশের সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১১শোর বেশি মানুষ নিহত হয় – যাদের মধ্যে বেশির ভাগ ছিলেন পোশাকশ্রমিক এবং তার আগে আশুলিয়ায় আরেকটি পোশাক কারখানায় অগ্নিকান্ডে ১১২ জন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় এই দাবি আরও জোরদার হয়েছিল সেসময়।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে আজকের বৈঠক থেকে বাংলাদেশ কতটা সুবিধা নিতে পারবে – সে প্রসঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছিলেন, জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে যে কাজ গুলো করেছে – সেগুলো তুলে ধরতে হবে এবং একই সাথে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে তাদের পরিকল্পনার কথা আলোচনা করতে হবে।
তিনি বলেন “তাদেরকে কনভিন্স করতে হবে বাংলাদেশের কাজগুলো সম্পর্কে, আর মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে কি ভাবছে সেটার ওপরেও নজর রাখতে হবে।”
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়তা বাড়ানোর জন্য এই টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় গতবছরের নম্ভেবরে। চুক্তিতে বলা হয়, এর ফলে সম্প্রসারিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হবে এবং এ থেকে লাভবান হবে উভয় দেশ। চুক্তি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে একটি ফোরাম গঠন করা হয়েছে। এই ফোরামেরই প্রথমবারের বৈঠক হচ্ছে আজ।