সিরাজগঞ্জে পরিবহণ ধর্মঘটের সময় রোববার আবারো পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাত পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে তিন পুলিশকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের বিরোধ নিরসনে রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি সমঝোতা বৈঠক হলেও কোনো সমাধান হয়নি। তবে আবারো সমঝোতা বৈঠক হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, ধর্মঘট চলাকালীন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোববার সকাল থেকে পৌর বাসটার্মিনালের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বেশ কিছু শ্রমিক একত্রিত হয়ে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় অন্তত ৭জন পুলিশ আহত হয়। আহতদের সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ ছোঁড়া হয়েছে। এ সময় তিন শ্রমিকও আহত হয়েছে বলে শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।
মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান তালুকদার জানান, পুলিশ কোনো উস্কানি ছাড়াই গুলি চালায়। এতে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের চারজন কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক শ্রমিক আহত হয়। রোববার রাতের মধ্যে সদর থানার ওসি, ডিবি ওসি সহ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা না হলে সোমবার থেকে রাজশাহী বিভাগে সকল পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হবে।
সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম জানান, সিএনজি অটোরিকশা ধর্মঘট ডাকা হয়নি। তবে বিভিন্ন স্থানে মোটর শ্রমিকেরা সিএনজি অটোরিকশা চালকদের মারপিট করায় ভয় পেয়ে সিএনজি অটোরিকসা চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, একটি ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিএনজি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ আইন প্রয়োগ করেছে। কিন্তু শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশ অপসারণের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, গনতান্ত্রিক দেশে অপসারণ দাবি করতেই পারে। তবে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ-এনায়েতপুর সড়কে সাইড দেয়া নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালকের সাথে বাসের শ্রমিকদের সাথে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার সকাল থেকেই এই দুই সংগঠনের শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়। পরে বাস শ্রমিকেরা সিরাজগঞ্জ এম এ মতিন বাসটার্মিনালের সামনে সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মহাসড়কে অবস্থান নিলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময়র বাস শ্রমিকেরা বাস দিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিলে পুলিশ এসে টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। শনিবার রাতে শ্রমিকের সাথে পুলিশের পুনরায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনার জের ধরেই শ্রমিকেরা রোববার থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয়।