স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা খাতকে অন্তর্ভূক্ত করলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।
তিনি বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় বিনিয়োগ বাড়ালে টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিও নিশ্চিত হয়।
স্পিকার সুইডেনের স্টকহোমে যৌথভাবে সুইডেন পার্লামেন্ট, ইউএনএফপিএ এবং ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টারি ফোরাম (ইপিএফ)-এর ৬ষ্ঠ ‘ইন্টারন্যাশনাল পার্লামেন্টারিয়ানস কনফারেন্স অন দা ইমপ্লিমেন্টেশন অব দা আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন (আইপিসিআই)- ২০১৪ এর এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় একথা বলেন।
সম্মেলনে ‘উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়কে অন্তর্ভূক্তকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’ শীর্ষক এ গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়।
স্পিকার এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে আজ ঢাকায় ফিরেছেন।
গোলটেবিল বৈঠকে স্পিকার বলেন, নারীদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে নারীরা আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে এবং পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সকল উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সমান অংশীদার হতে পারে। অধিকারনির্ভর ও জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিমালা নারী-পুরুষ সকল জনগণের মধ্যে গতিশীলতা আনয়ন করে এবং তাদের সকল উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে।
তিনি বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে রাষ্ট্রকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র, অতিদরিদ্র এবং দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী নারীদেরকে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক জীবনের সকল ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিতে হবে।
এছাড়া স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সুইডেন পার্লামেন্ট রিকসডাগে এর স্পিকার পার ওয়েস্টারবার্গের সাথে তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠককালে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগই সর্বোৎকৃষ্ট বিনিয়োগ। মানব উন্নয়নের সকল সূচকে বিশেষ করে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস, নারী শিক্ষা হার বৃদ্ধি এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, বিশাল যুব জনশক্তিই হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যার সৌন্দর্য্য। যুব জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে নিবিড় কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। জনসংখ্যার বিশাল অংশ এখন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের সাথে খাপ খাইয়ে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। যেখানে ১১০ মিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন এবং ৪ মিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে তৈরী পোশাক শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটায় বিপুল সংখ্যক নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এসব নারী শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, দিবাযতœ কেন্দ্রের সেবাসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
তিনি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানী খাত, জাহাজ পুনঃনির্মাণ খাত এবং অন্যান্য সম্ভাব্য সকল খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের অুনরোধ জানান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আইডিইএ -এর কর্মকর্তাদের সাথে আইডিইএ সদর দপ্তরে এবং বাংলাদেশ-সুইডেন বিজনেজেস কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দের সাথে শেরাটন স্টকহোম হোটেলে বৈঠক করেন।
এ সময় তারা দু’দেশের বাণিজ্য বিনিয়োগের বিদ্যমান পরিবেশের প্রশংসা করেন এবং বাণিজ্যে সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।