সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বাবা-মা হারানো এতিম শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে সব খরচ বহনের দায়িত্ব নিল পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এসব এতিমদের জন্য প্রতিষ্ঠিত আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম পরিচালিত এতিমখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন বিজিএমই সভাপতি আতিকুল ইসলাম।
শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেঞ্জ লাউঞ্জে এতিম কন্যা শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এতিমখানাটির উদ্বোধনীতে এমনটাই ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এ সংগঠনটির সভাপতি আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।
ফিতা কেটে সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এতিমখানাটির উদ্বোধন করেন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য ও সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেল চেয়ারম্যান ডা. মো. এনামুর রহমান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ সহ সভাপতি (অর্থ) রিয়াজ-বিন-মাহমুদ, এফবিসিসিআই পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম’র সভাপতি মো. শামসুল হক চিশতী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আঞ্জুমানের ট্রাস্টি ও সহ সভাপতি মোহাম্মদ আজিম বখশ।
এতিমখানাটির প্রশাসনিকসহ সার্বিক দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এনাম মেডিকেল কলেজ এর চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান।
আতিকুল ইসলাম বলেন, রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের বাচ্চাদের দায়িত্ব নেয়ার কথা বিজিএমইএ’র। সেজন্য আজ ঘোষণা দিচ্ছি, যতদিন বিজিএমইএ টিকে থাকবে ততদিন রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের বাচ্চার সকল দায়িত্ব নেবে। তাদের লেখাপড়াসহ সব খরচ বহন করবে বিজিএমইএ।
তিনি বলেন, রানা প্লাজা ধসের কারণে অনেক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান বন্ধের পথে। অনেক শ্রমিক এখন বেকার হচ্ছে। ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ হাজার ৫০০ গার্মেন্টস শ্রমিক বেকার হয়েছে। তাই এ শিল্পটির দিকেও সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তিনি বলেন, রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো বাচ্চাদের ক্ষতিপূরণ হয়তো দিতে পারবো না। বাবা-মায়ের স্নেহ ভালোবাসা দিতে না পারলেও আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে যে সেবা চালু হলো তা কোনো অংশে কম নয়।
আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজিজুর রহমান বালিকা হোম (এতিমখানাটি)’ রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের কন্যা শিশুদের জন্য বিনাখরচে লালন-পালন শিক্ষা ও অন্যান্য সকল সুবিধা দিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বিজিএমইএ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের ৬ জন বাচ্চা নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি এতিমখানাটির পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৬ জন। প্রতিদিন একটি শিশুর পেছনে আঞ্জুমান মফিদুলের খরচ হয় ১৬৬ টাকা।