নির্বাচন ইস্যুতে সংসদের বাইরে আলোচনা করতে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সাংবিধানিক ইস্যু, তাই সংসদেই আলোচনা করতে চায় দলটি। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থান বলে দলের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় অবস্থানের কারণে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে এই সরকারের বিকল্প নিয়ে আলোচনার ব্যাপারে নমনীয় আওয়ামী লীগ।
এদিকে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর সৃষ্ট জটিলতা নিরসন ও আগামী নির্বাচনের ফরর্মুলা বের করতে দুই নেত্রীকে সংলাপে বসতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ও ব্লেইক। তবে ব্লেইকের এই আহ্বানে গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। ব্লেইকের এই আহ্বান গতানুগতিক বলেও মন্তব্য করছেন দলটির নেতারা।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, ব্লেইক তার নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন। হয়তো তার মনে হয়েছে তাই তিনি দুই নেত্রীর সংলাপের কথা বলেছেন। এটাই একমাত্র উপায় হতে পারে না বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।
আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ব্লেইকের আহ্বানকে সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ব্লেইকের কথায় দেশ চলে না।
এদিকে, সংকট উত্তরণে দুই দলের শীর্ষ নেতাদের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা বিষয়কেও গতানুগতিক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ব্লেইক রুটিন ভিজিটে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তারা বিভিন্ন দেশে ভিজিট করেন।
‘ব্লেইক তার আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন। এতে খুব বেশি পুলকিত বা আকাশ ভেঙে পড়ার মতো হতাশ হওয়ার কিছু নেই।’
‘আমরা বার বারই সংসদে এসে বিএনপিকে মতামত দিতে বলেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর অসুবিধা কি সেটা তারা সংসদে এসে বলুক। বিষয়টি সাংবিধানিক, এটা সংসদেই আলোচনা হতে পারে।’
‘এটা নিয়ে সংসদের বাইরে কোনো আলোচনা নয়। এটা আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থান। সংসদের বাইরে অন্য যে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’
‘বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আমাদের নেতাদের কথা হয় না এটা ঠিক না। দেখা হলে কথা হয়। আমরা যদি সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা করে চলতে পারি তবে সেটা ভালো দিক।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির আরেক সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা যে কোনো বিষয়ে যে কোনো জায়গায় আলোচনা জন্য প্রস্তুত। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আলোচনা সংসদ ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিরোধী দল যদি ক্রিকেট খেলা, আইনশৃঙ্খলা, অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করতে চায় সংসদের বাইরে হতে পারে।’