জেলার রামগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ আলমের বিরুদ্ধে ৩৭টি ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ১২২ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এই আত্মসাতের ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসন ও দূর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছন।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থ বছরে রামগড় উপজেলায় টিআর কাবিখা, সংসদ সদস্যের বিশেষ বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন খাদ্য শষ্য বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ১ নং রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম নিজে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যদের নামে ভুঁয়া বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে ১২২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আত্মসাত করেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম জানান, সিরুটিলা হতে রফিকের দোকান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার,ঢাকা কলোনি থেকে চুন ব্যাপারী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, থলিপাড়া থেকে নাভাঙ্গা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার এবং হাজা বৈদ্যপাড়া হতে তৈকাতং হরি মন্দির পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের প্রকল্পের কোন অস্তিত্বই নেই। এ চারটি প্রকল্পে আট মেট্রিক করে ৩২ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য আত্মসাত করা হয়েছে।
তিনি জানান, এ ছাড়া অন্য ৩৭টি প্রকল্পের কোনো কোনটিতে নাম মাত্র কাজ করে কিংবা প্রতিষ্ঠানের প্রধান,প্রকল্প চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজেই প্রকল্পের পুরো অর্থ আত্মসাত করেন। টিআর কাবিখা প্রকল্পের কাজ ১০০ দিন ও ৪০ দিনের কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে করানোও অভিযোগ রয়েছে।
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের একটি প্রকল্পের কাজ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ-আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার রাজনৈতিক ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য এটি একটি ষড়যন্ত্র। তার নিজ দলের কতিপয় ব্যক্তিও এ যড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত বলে জানান তিনি।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের এসব অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক কাজী মোজাম্মেল হক গত ৩০ মার্চ রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল খানকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জানান, তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। দাফতরিক নানা কাজের কারণে এখনো তদন্তের কাজ শুরু করতে পারেননি।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, এ সব অভিযোগ উঠার পর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ-আলম অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার জন্য মরিয়া উঠেছেন। তদন্তকারীদের সঙ্গে রফার পাশাপাশি অভিযোগকারীদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন।