হোটেল রূপসী বাংলার মাঝারি ও নিচের সারির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বহাল থাকলেও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা চাকরি হারাচ্ছেন। রোববার রূপসী বাংলার স্থলে হোটেল পরিচালনাকারী ইন্টারন্যাশনাল হোটেল চেইন ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে সরকারের চূড়ান্ত চুক্তি হচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী হোটেলের বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী ইন্টারকন্টিনেন্টালের চাকরিতে বহাল থাকবেও জ্যেষ্ঠরা আর চাকরিতে থাকছেন না। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালের নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এই চুক্তি অনুযায়ী ইন্টারকন্টিনেন্টাল ৩০ বছরের জন্য রূপসী বাংলা ইজারা নেবে। এজন্য হোটেলে বড় ধরনের সংস্কার কাজ করা হবে। এতে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে। আর এ সময়কালে হোটেলটি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
রূপসী বাংলার তদারকি প্রতিষ্ঠান বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল) ইন্টারকন্ডিনেন্টালকে আগেই জানিয়েছিল, হোটেল বন্ধ থাকলেও রূপসী বাংলার বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
সূত্র জানায়, বর্তমানে রূপসী বাংলা হোটেলটি (সাবেক শেরাটন) পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল)। হোটেলটিতে প্রায় ৬৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। হোটেলের বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজুর রহমানসহ ২০ বছরের বেশি চাকরি করছেন এমন বেশ কিছু কর্মকর্তা রয়েছেন। এদেরকে চাকরিতে অবসরকালীন সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সম্মানের সঙ্গেই বিদায় জানানো হবে। অবশ্য চাকরি হারানোর তালিকায় কারা রয়েছেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এই ইস্যুতেই রূপসী বাংলা পরিচালনাকারী আগের হোটেল চেইন শেরাটনের সঙ্গে বিএসএলের সমঝোতা হয়নি। যে কারণে দুই বছর ধরে চলা আলোচনার পরও শেরাটন ২০০৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যায়।
তবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল রূপসী বাংলা হোটেলের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ইন্টারকন্টিনেন্টাল অন্য হোটেলের চাকরি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। যা চুক্তিতে উল্লেখ থাকবে।
চূড়ান্ত চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইন্টারকন্টিনেন্টাল এশিয়া অঞ্চলের প্রধানসহ উর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।
গত জুলাই মাসে ইন্টারকন্টিনেন্টালের লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর প্রায় সাত মাস পর চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে ২৭ বছর হোটেল পরিচালনা শেষে শেরাটন গত বছরের ১ মে বিএসএলকে হোটেলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হস্তান্তর দিয়ে চলে যায়।
১৯৮৩ সাল থেকে বিএসএলের মালিকানাধীন হোটেলটি পরিচালনা করে শেরাটন। এর আগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালই মিন্টো রোডের এই হোটেলটি পরিচালনা করে আসছিল। ২০০৯ সালের ১ মে থেকে হোটেল রূপসী বাংলা নামে হোটেলটি পরিচালনা করে আসছে বিএসএল।