আমাদের খাবার তালিকায় ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি সন্দেহাতীতভাবে একটি পুষ্টিকর খাবার। ডাক্তারের কাছে গেছেন, ডাক্তার আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ডিমকে রাখবেন। এছাড়া বাসায় রান্না করার কেউ নেই তো শেষ ভরসা হচ্ছে ডিম। হোটেলে খাবেন? সেখানেও মাছ মাংসের ভেজাল এড়িয়ে সবার পছন্দ সেই ডিমই। অর্থাৎ ডিম আমাদের খাদ্য তালিকায় অতি সহজ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য হয়ে ওঠেছে।
হঠাৎ ডিম ভাজতে গিয়ে দেখলেন ডিমটি পুরোপুরি শক্ত হয়ে আটকে গেল ঠিক প্লাস্টিক এর মত। আপনি যে ডিমটি ভেজে খাবেন বলে ভাবছেন সেটা কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলেও সত্য আমাদের দেশীয় বাজারে ব্যাপক ভাবে ঢুকে পড়েছে এই কৃত্রিম ডিম।
চীনে ২০০৪ সালে প্রথম কৃত্রিম ডিম তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘দ্য ইন্টারনেট জার্নাল অফ টক্সোকোলজিতে কৃত্রিম ডিম সম্পর্কে বিশ্লেষণধর্মী তথ্য প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃত্রিম ডিমে কোনো খাদ্যগুণ বা প্রোটিন কনটিই নেই। বরং তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। কিভাবে তৈরি হয় কৃত্রিম ডিম ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত প্রস্তুতপ্রনালীতে দেখা যায়, কুসুম ও সাদা অংশের সমন্বয়ে কৃত্রিম ডিম তৈরি করতে প্লাস্টিকের ছাঁচ ব্যবহৃত হয়। তবে তার আগে কুসুম তৈরি করা হয় বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে। সরাসরি ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ও কালারিং ডাই দিয়ে লাল বা গাঢ় হলুদ রংয়ের কুসুম তৈরি করা হয়। তার ওপর অতি পাতলা স্বচ্ছ রাসায়নিকের আবরণ তৈরি করা হয়। যাতে কুসুম ও সাদা অংশ এক না হয়ে যায়। সাদা অংশ তৈরিতে ব্যবহার হয় ক্যালসিয়াম কার্বনেট, স্টার্চ, রিজিন জিলাটিন ও এলাম। প্লাস্টিকের ছাঁচ ডিমের সাদা অংশ তৈরি করে তার মাঝখানে ডিমের কুসুম তৈরি করা হয়। শেষ ধাপে ডিমের উপরের শক্ত খোলস তৈরিতে করা হয়। এর জন্য ব্যবহার করা হয় ওয়াক্স এর মিশনখানে ব্যবহার করা হয় প্যারাফিন, বেনজয়িক এসিড, বেকিং পাউডার, ক্যালসিয়াম কার্বাইড। সাদা অংশকে ওয়াক্সের দ্রবণে কিছুক্ষণ নাড়ানো চাড়ানো হয়। বাইরে থেকে স্বল্প তাপ প্রয়োগ করা হয়। এতেই তৈরি হয়ে যায় হুবহু ডিমের মতো দেখতে একটি বস্তু।
কিভাবে চিনবেন কৃত্রিম ডিম
কৃত্রিম অনেক বেশি ভঙ্গুর। অল্প চাপে ভেঙ্গে যায়। এ ডিম সিদ্ধ করলে এর কুসুম বর্ণহীন হয়ে যায়। ভাঙ্গার পর আসল ডিমের মতো কুসুম এক জায়গায় না থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। কৃত্রিম ডিম আকারে আসল ডিমের তুলনায় সামান্য বড় এবং এর খোলস মসৃণ হবে।
কৃত্রিম ডিম বা নকল ডিম এক কথায় বিষাক্ত। কৃত্রিম ডিম তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বনেট, স্টার্চ, রেসিন, জিলেটিন মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন এ ধরনের ডিম খেলে স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। ক্যালসিয়াম কার্বাইড ফুসফুসের ক্যান্সারসহ জটিল রোগের কারণ।