দশম জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ৫১ দশমিক ৩৫ শতাংশ হলও তাতে আরো গতিশীলতা আনতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে লোকবল বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রথম ত্রৈমাসিক (১২ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ) প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়।
এছাড়া মন্ত্রিসভা ইশতেহার অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা করে কাজ করার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, গত ১২ জানুয়ারি বর্তমান সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছে ১০টি। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ৩৭টি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে ১৯টি। পাস হয়েছে দু’টি আইন। অনুমোদিত চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক ছয়টি ও অনুমোদিত নীতি বা কর্মকৌশল দু’টি। এছাড়া এ সময়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২৬টি সার-সংক্ষেপ উপস্থাপিত হয়। তিনি বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় প্রথম প্রান্তিকের জন্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের এ হার ভালো হওয়ায় মন্ত্রিসভা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রিপরিষ সচিব বলেন, সরকারি মঞ্জুরিকৃত শূন্য পদ পূরণে নিয়োগ ত্বরান্বিত ও প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে গঠিতব্য কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব ও অর্থসচিবসহ আরো কয়েকজন থাকবেন।
তিনি বলেন, জনবল সংকটের কারণে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য মন্ত্রিসভা এ কমিটি গঠন করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শূন্য পদে নিয়োগ দিতে অনেক ক্ষেত্রে অনেক সময় লেগে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সচিব কমিটির অনুমোদন লাগে। এছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগ দিতে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) সুপারিশ করে থাকে। কিন্তু পিএসসির ক্যাপাসিটি কম, তাদের কাজ অনেক বেড়ে গেছে। তাই এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে কৌশল নির্ধারণে এ কমিটি কাজ করবে। পরে তা সুপারিশ আকারে পেশ করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দুটি সামরিক সরকারের শাসনামলে জারি করা সকল অধ্যাদেশ বাতিল করেছে আদালত। ওই সময়ে সাড়ে ৫শ’র মতো অধ্যাদেশ জারি করা হয়। তবে ওই সময়ের জনগুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশগুলো যুগোপযোগী ও বাংলায় প্রণয়নের মাধ্যমে আইনে পরিণত করে কার্যকর করার বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তিনি বলেন, ৫৫০ এর মধ্যে ২৫৭টি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করতে হবে। এরমধ্যে ১৬টি অধ্যাদেশ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ১১টি ইতিমধ্যে আইনেও পরিণত হয়েছে। আরো ২৪১টি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। মন্ত্রিসভা এ কার্যক্রম আরো ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমান নির্বাচিত সরকারের ইশতেহার বাস্তবায়নে গত ২০ জানুয়ারি একটি অগ্রাধিকারমূলক তালিকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো মন্ত্রিসভা বৈঠকে। সেই তালিকায় যে কাজ আগে করতে হবে তা হবে ‘টাইম বাউন্ড একশন প্ল্যান’ বা সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা। এ বিষয়টি আরো ত্বরান্বিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা।