রানা প্লাজা ধসের এক বছর পরও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা বলে মনে করেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের ফান্ড সংগ্রহ এবং বিতরণে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
রানা প্লাজা ধসের এক বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিষয়ে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের বিশেষ পর্বে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবিসি বাংলার আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় শনিবার সন্ধ্যায় বিয়াম মিলনায়তনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্যানেল আলোচক ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম এবং সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আমীর খসরুর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সব কিছু স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হচ্ছে। তথ্য চাইলে যে কেউ তা পেতে পারেন। এ পর্যন্ত রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ২২ কোটি ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৭২০ টাকা দেয়া হয়েছে।
সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে শ্রমিকরা যে অর্থ পেয়েছে- তা অনুদান হিসেবে পেয়েছে। কিন্তু আইনানুযায়ী যে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা তা পায়নি।
অন্যদিকে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ব্যর্থ নয়। আমাদের তৎপরতার কারণেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মাধ্যমে বায়ার ও রিটেইলার কাছ থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলারের ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ১৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে। যা শ্রমিকদের দেয়া হয়েছে। এ খাতে আরও ফান্ড আসলে শ্রমিকদের আরও দেয়া হবে।
আলোচনার এক পর্যায়ে এইট টি ইমাম বলেন, ডিএনএ টেস্ট শেষ হওয়ার ওপর নির্ভর করছে কতদিনে রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সহায়তা কার্যক্রম শেষ হবে। অবশ্য এ জন্য তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের আরও সহায়তার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসা উচিত। তাদের পক্ষে সম্ভব না হলে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে।
অনেক আত্মীয় এখনও বুকে ছবি নিয়ে তাদের স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন- এ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের জন্ম রেজিস্ট্রেশন সনদ না থাকায় নিখোঁজ শ্রমিকের লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অনেক শ্রমিকের লাশ মাটির নিচে চলে গেছে। যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের আত্মীয়-স্বজনকে ডেকে শিগগিরই একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, পরিদর্শনের নামে বিদেশিরা বাড়াবাড়ি করছে। এ বাড়াবাড়ি আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি।