ইমরান এইচ সরকার জবাবদিহিতাহীনতার সুযোগ নিচ্ছে যা অনৈতিক এবং গণজাগরণ মঞ্চের ঘোষিত ৬ দফা দাবির পরিপন্থী। তাই এখন থেকে ইমরানকে মুখপাত্র হিসেবে মানতে নারাজ ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক (বোয়ান)।
শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় বোয়ান’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অনিমেষ রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অনিমেষ রহমান বলেন, শাহবাগ আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্য ঐক্য, অহিংসা ও জনসম্পৃক্ততা বর্তমানে অনুপস্থিত থাকায় এই মুহূর্তে গণজাগরণ মঞ্চ আর কার্যকর অবস্থায় নেই। এর প্রমাণ হচ্ছে বর্তমানে ইমরানসহ বিবদমান বিভিন্ন পক্ষের কাদা ছোঁড়াছুড়ি। বোয়ান এই কাদা ছোঁড়াছুড়ি এবং বিভক্তির দায়ভার নেবে না বলেও জানালেন তিনি।
তিনি জানান, বোয়ানের যাত্রালগ্নে আন্দোলন পরিচালনার জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল যাতে ইমরান এইচ সরকারকে আহ্বায়ক করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করলেও আন্দোলনের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে তার উদাসীনতা ও ব্যক্তিকেন্দ্রিকতায় তা আর সম্ভব হয়নি।
সংগীত শিল্পী প্রীতম আহমেদ বলেন, বহু সামাজিক, সংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের অংশগহণে গণজাগরণ মঞ্চের সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় পুরো আন্দোলনটিকে সমন্বয় করার জন্য ইমরান এইচ সরকারকে মুখপাত্র করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এই গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা নেই, তাই ইমরান এখন আর সেই গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্রও নেই।
ইমরান এইচ সরকারের বর্তমান কার্যক্রমের দায়-দায়িত্ব বোয়ান নেবে কিনা এমন এক প্রশ্নে অনিমেষ রহমান বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠেছিল বহু সংগঠনের সমন্বরয়ে, তাই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা বা তার কর্যক্রমের দায়দায়িত্ব নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে কে কথা বলবেন তা নিয়ে বোয়ানের সদস্যদের মাঝে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়েছে।
২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছিল ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায়কে প্রত্যাখ্যান করে তার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশের ডাক দেয় সংগঠনটি। পরবর্তীতে এটি গণমানুষের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে বিশাল আকার ধারণ করে এবং সৃষ্টি হয় গণজাগরণ মঞ্চ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন- সংগঠনের সদস্য ব্লগার ড. রাশেদুল হাসান, কানিজ আকলিমা সুলতানা, পজিট্রন প্রীতম, আমি বাঙাল, মোরসালিন মিজান প্রমুখ।