যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ২০ বছর লাগবে-আবদুল মুহিত

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ২০ বছর লাগবে-আবদুল মুহিত

আগামী দু’চার বছরে নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ হতে কমপক্ষে ২০ বছর লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ প্রসঙ্গে তিনি ৭০ বছর আগে সংঘটিত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বলেন, এখনো মাঝে মধ্যে এই যুদ্ধের বিচারের ট্রায়াল হয়। বাংলাদেশেও যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। প্রধান প্রধান অভিযুক্তদের সাজাও হয়েছে। এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে নিউইয়র্কের জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউর তাজমহল পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন বাস্তবতা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।

মতবিনিময় সভার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন সিলেট পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও প্যানেল মেয়র আলহাজ ফখরুল ইসলাম খান।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সুধীজনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত সিলেটের সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নিউজার্সির প্লেইনস বরোর কাউন্সিলম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরন নবী, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, নিউইয়র্কে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসান, জ্যামাইকা কমিউনিটি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট তৈয়বুর রহমান হারুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরনবী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা আবুল কাশেম প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমানের ফ্লাইট চালু প্রসঙ্গে সুধীজনের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, বাংলাদেশের বিমানের ভীত এখনো দুর্বল। এই রুটে বিমানের ফ্লাইট চালু হতে আরো দু-এক বছর লাগবে। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা কাঠামো এতদিনে যেটুকু তৈরি হয়েছে তা অত্যন্ত দুষ্টু, দুর্নীতিপরায়ণ ও অদক্ষ। বিমানবাহিনীর দায়িত্বরত অথবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এটাকে চালায়। তারা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য উপযুক্তও নয়। এটা বাংলাদেশ বিমানের একটি বড় দুর্বলতা। এছাড়া বিমান স্বল্পতা এবং নিরাপত্তাজনিত কিছু দুর্বলতা রয়েছে যা সংস্কার হচ্ছে। তিনি বলেন, এসব দুর্বলতা অতিক্রম করতে পারলেই বিমানের নিউইয়র্ক রুট চালু হতে পারে।

দেশে প্রবাসীদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের কিছু করার নেই। এটা একান্তই ব্যক্তি মালিকানার ব্যাপার। তিনি বলেন, দেশে যত মামলা মোকদ্দমা হয় তার ৭৫ শতাংশই জমি সংক্রান্ত। সবার জন্য এই একটি রাস্তাই খোলা আছে। তবে কারো জমি যাতে কেউ না নিতে পারে এজন্য সরকার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। হয়তো আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

বিশ্বব্যাংক থেকে পেনশন পান বলে সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল যে মন্তব্য করেছেন এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবারো বলেন, ‘অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যারা তথ্য না জেনে অনেক আবোল-তাবোল কথা বলেন। পরিকল্পনামন্ত্রীও এ ধরনের আবোল-তাবোল অনেক কথা বলেছেন।’ তিনি বলেন, আমি যদি বিশ্বব্যাংকের পেনশন খাই এটা বিশ্বব্যাংকে খোঁজ নিলেই জানা যেত।’

জিএসপি সুবিধা বাতিল প্রসঙ্গে সাবেক বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়াকে দায়ী করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া বিরোধী দলের নেত্রী থাকাকালে সরকারের বিরুদ্ধে নয়, তিনি দেশের বিরুদ্ধে বিদেশীদের কাছে আপিল করেছিলেন। আর এর জন্য দেশ এখন যথেষ্ট কষ্ট ভোগ করছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের দেশের জন্য।’

এর আগে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির দেওয়া বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য এবং ভবিষ্যত্ কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য আন্তর্জাতিক জেলা সংবাদ শীর্ষ খবর